প্রকাশ্যে চোলাই খাওয়ার অভিযোগে ধৃত এক যুবককে ছাড়ানোর চেষ্টা রুখতে গিয়ে মঙ্গলবার রাতে বাগদার কুরুলিয়া বাজারে আক্রান্ত হল পুলিশ। জনতার হামলায় পাঁচ পুলিশকর্মী জখম হন। গ্রেফতার করা হয়েছে আট জনকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গোলমালের সময়ে শূন্যে গুলিও চলে। তবে, তাতে কেউ হতাহত হননি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে তাঁদের কয়েক জন জখম হন।
পুলিশের দাবি, বেশ কয়েকটি চোলাইয়ের ভাটি ভেঙে দেওয়ায় ওই হামলা হয়েছে। আট জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে, গুলি চালানো বা পুলিশের লাঠি চালানোর কোনও ঘটনা মানতে চাননি উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকায় কয়েকটি চোলাইয়ের ভাটি ভেঙে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় কুরুলিয়া বাজার সংলগ্ন মাঠ থেকে প্রকাশ্যে চোলাই খাওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে নিয়ে পুলিশ যখন থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়, তখন কুরুলিয়া বাজারে পুলিশের গাড়ি আটকান কিছু গ্রামবাসী। তাঁরা দাবি করেন, ওই যুবক নির্দোষ। তিনি চাকরির প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন। পুলিশ ধৃতকে ছাড়তে রাজি হয়নি। দু’পক্ষের বচসা বাধে। সেই সময়ে জনতার পক্ষ থেকে পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলে ছিলেন পাঁচ জন পুলিশকর্মী। দু’জন জখম হন ইটের আঘাতে। এক পুলিশকর্মীকে জনতা পাশের কলাবাগানে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। অন্য জন জনতার মারে জখম হন। ঘটনার সময়ে একটি অটোতে ভাঙচুর চালায় জনতা। গোলমালের সুযোগে ধৃত যুবক গাড়ি থেকে নেমে পালায়। জনতা আহতদের ওই এলাকাতেই আটকে রাখে। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ লাঠি চালায় বলেও অভিযোগ। ইটের ঘায়ে জখম দুই পুলিশকর্মীকে বাগদা ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসার আগেই অবশ্য মামা-ভাগিনা এলাকার কাঁঠালবাগান গ্রাম থেকে মোটরবাইকে করে একদল যুবক ওই এলাকায় গিয়ে তাণ্ডব চালায়। হামলা হয় বেশ কিছু দোকানেও। পরে ঘটনাস্থলে যান বাগদা থানার ওসি গোপাল বিশ্বাস ও গাইঘাটা থানার সিআই বিশ্বজিৎ পাত্র। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় সন্ধের পর চোলাই বিক্রি হয়। মামা-ভাগিনার যে যুবকের নেতৃত্বে তাণ্ডব চালানো হয়, সে পুলিশের নাম করে চোলাই কারবারিদের থেকে তোলা আদায় করে। পুলিশ ওই যুবককে খুঁজছে।
পরে রাতে কুরুলিয়াতে তল্লাশির সময় পুলিশ অত্যাচার চালায় এবং মিথ্যা মামলায় কয়েক জনকে গ্রেফতার করে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। অনুপ বিশ্বাস নামে এক যুবককে তাঁর বাড়ির দরজা ভেঙে পুলিশ গ্রেফতার করে বলে অভিযোগ।
অনুপের বৌদি অসীমা বিশ্বাসের দাবি, “অনুপ ঘটনার সময় এলাকাতেই ছিল না। তাও তাঁকে ধরা হয়েছে।” বুধবারও ওই এলাকা ছিল থমথমে। গ্রাম ছিল পুরুষশূন্য। |