লরি ছিনতাইয়ের সময় দুষ্কৃতীদের ছুরিতে আহত হলেন এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক। আহত অবস্থায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দুষ্কৃতীদের পিছনে ধাওয়া করেন ওই চালক। অভিযোগ, পথে সুতি ও রঘুনাথগঞ্জ থানার দুটি টহলদারি পুলিশ দলের সাহায্য চেয়েও পাননি তিনি। শেষে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই চালক নিজেই অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়ে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন। তাঁর নাম কাদির হোসেন। বেলডাঙা থানার ভাবতা-র বাসিন্দা। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী হিসেবে তিনি সুতির মহেশাইল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে সুতিতে এক পথ দুর্ঘটনায় আহতদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে রাত ৩টে নাগাদ মহেশাইল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফিরছিলেন কাদির। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সরলার মোড়ের কাছে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে ছিল জঙ্গিপুরগামী একটি পিক আপ ভ্যান ও ফরাক্কাগামী একটি লরি। অ্যাম্বুল্যান্স চালক কাদির বলেন, “সড়ক জুড়ে গাড়ি দুটি দাঁড়িয়ে থাকায় আমাকে অ্যাম্বুল্যান্স থামাতে হয়। গাড়ির আলোয় দেখি, ৫-৬ জন সশস্ত্র লোক একটি লরিকে দাঁড় করিয়ে তার উপর হামলা চালাচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড় করাতেই দুষ্কৃতীরা ধেয়ে আসে আমার দিকে।” তিনি আরও বলেন, “দুষ্কৃতীরা ছুরি মারে আমার পাঁজরের পাশে। গাড়ির চাবিও কেড়ে নেয়। এরপর দুষ্কৃতীরা পিক আপ ভ্যানে চেপে পালাতে থাকে। আমার কাছে থাকা দ্বিতীয় চাবি নিয়ে গাড়ি চালু করে ওদের পিছনে ধাওয়া করি।”
পথে আহিরণ সেতুর কাছে ও অজগরপাড়ার মোড়ে দু’বার পুলিশের টহলদারি গাড়ি দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ওদের পিছনে ধাওয়া করতে বললেও ওরা কোনও সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি বলে জানাচ্ছেন কাদের। তাঁর কথায়, “শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের ভ্যানটি উমরপুর দিয়ে ভাগীরথীর সেতু পেরিয়ে পালিয়ে যায়। আমিও যন্ত্রণায় থাকতে না পেরে ভোর ৪টে নাগাদ জঙ্গিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে সমস্ত ঘটনা মহেশাইল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও জঙ্গিপুর হাসপাতালে জানাই।”
বুধবার সকাল পৌনে এগারোটার সময় খবর পেয়ে পুলিশ সুপার হুমায়ন কবীর বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। জাতীয় সড়কে টহলে থাকা পুলিশ কর্মীদের গাফিলতি প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এরপরই পুলিশ সুপারের নির্দেশে রঘুনাথগঞ্জের আইসি এস আর কবীর জঙ্গিপুর হাসপাতালে গিয়ে কাদিরের জবানবন্দী নেন। পরে তার কথা মত রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। |