গবেষণায় খোঁজ ৫০টিরও বেশি রঙের
ভেষজ রং তৈরিতে সাফল্য বিদ্যাসাগরেও
থ দেখিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সেই পথে এগিয়ে সাফল্য এল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও।
গাছের ডাল, শিকড়, পাতা ও ফল থেকে ভেষজ রং তৈরিতে সাফল্য মিলল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণায় এখনও পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক রঙের খোঁজ মিলেছে। এমনই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অমলকুমার মণ্ডলের। তাঁর কথায়, “পরিকাঠামো ভালো হলে এবং আরও বেশি সুযোগ থাকলে আমরা ভেষজ রঙের চাহিদাকে মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় করতে পারব। স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে যদি ভেষজ রং প্রস্তুত করা যায় এবং তা বাজারে বিক্রি করা হয়, তা হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোও উপকৃত হবে।”
ক’দিন আগেই ছিল দোল। অন্য বছরের মতো এ বছরেও দেদার বিক্রি হয়েছে কৃত্রিম রং। কিন্তু, এখন অনেকেই এই রং ব্যবহার করতে চাইছেন না। কারণ, এই রং থেকে অনেক সময় ত্বকের অ্যালার্জি হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। ফলে, তাঁরা ভেষজ রং-ই পছন্দ করেন। কয়েকবছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ফুলের পাপড়ি, ফলের নির্যাস থেকে তৈরি ভেষজ আবির সেই চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা এমনিতেই বনজ সম্পদে পূর্ণ। ফলে, এখানে ভেষজ রং নিয়ে গবেষণার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন অমলবাবু ছাড়াও গবেষক ছাত্র পীযূষকান্তি দাস। সহযোগিতা মিলেছে লেডি ব্রেবোর্ণ কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সংযুক্তা মণ্ডল (পাঁড়ুই) ছাড়াও চণ্ডীগড়ের জাতীয় গবেষণাগারের। বটানি ও ফরেষ্ট্রি বিভাগে, প্ল্যান্ট-ট্যাক্সোনমি, বায়ো সিস্টেমেটিক্স ও মলিকিউলার ট্যাক্সোনমির ল্যাবরেটরিতে চলা প্রাকৃতিক রং নিয়ে এই গবেষণায় ইতিমধ্যেই লাল, নীল, সবুজ, হলুদ প্রভৃতি রং করা সম্ভব হয়েছে।
বাজারী কৃত্রিম রঙে থাকে অ্যাসবেসটস পাউডার, চকের গুঁড়ো কিংবা সিলিকা। রং আরও চকচকে করার জন্য কাচের গুঁড়ো বা অভ্র মেশানো হয়। জল রঙের জন্য ব্যবহৃত অধিকাংশ রং আবার ক্ষারধর্মী হয়। তারে বেশ কিছু ভারী ধাতুও মেশানো থাকে। যেমন লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, নিকেল, জিঙ্ক, আয়রন ইত্যাদি। গবেষকদের বক্তব্য, কৃত্রিম রং এড়িয়ে প্রাকৃতিক বা ভেষজ রং ব্যবহার করলে তা যেমন পরিবেশ বান্ধব হয়, তেমনই ত্বকের কোনও ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। অমলবাবুর কথায়, “গবেষণার ফল থেকে এখনও পযর্র্ন্ত ৫০টিরও বেশি পরিবেশবান্ধব এবং ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক রঙের খোঁজ মিলেছে। আমরা আরও বেশি সংখ্যক রং তৈরির চেষ্টা করছি।”


কোন রং কী ভাবে
লাল: কৃষ্ণচূড়া ফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করলে
হবে পাউডার। জলে মেশালে পেস্ট।
হলুদ: গাঁদা ফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করলে
হবে আবির। জলে মেশালে মিলবে পেস্ট।
অপরাজিতা ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে
গুঁড়ো করলে নীল আবির মিলবে।
সবুজ: কুঁদরি, সীম বা বরবটি গাছের পাতা
থেঁতো করলে সবুজ রং পাওয়া যায়।
মেজেন্টা: বীট টুকরো করে শুকিয়ে গুঁড়ো
করে আবির। তার গুঁড়ো জলে মেশালে মেজেন্টা।
হলুদ কমলা (স্যাফ্রন): পলাশ জলে ভেজালে
হলদে-কমলা। শিউলির বোঁটা শুকিয়ে জলে
ভেজালে বা ফোটালেও এই রং মিলবে।
বাদামি লাল: মেহেন্দি পাতা থেঁতো করে জলে
মেশালে এই রং পাওয়া যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.