|
|
|
|
ময়দানে আগেই মোদী, বণিকসভায় এ বার রাহুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
এ বার দেশের শিল্প মহলের কাছে মুখ খুলবেন রাহুল গাঁধী। বলবেন দেশের শিল্প ও অর্থনীতির অভিমুখ সম্পর্কে কী কী রয়েছে তাঁর ভাবনায়। আগামী বৃহস্পতিবার বণিকসভা সিআইআই-এর বার্ষিক অধিবেশনে বক্তৃতা দেবেন তিনি।
সম্ভাবনাটা নিয়ে জল্পনা চলছিল অনেক দিন ধরেই। গত কয়েক দিনে বিজেপি-র অন্দরে যে সব ঘটনা ঘটে গিয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, আগামী লোকসভা ভোটে লড়াই হবে মূলত নরেন্দ্র মোদী বনাম রাহুল গাঁধীর মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা না হলেও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী যখন তাঁর ‘উন্নয়ন মন্ত্র’ দেশের সামনে তুলে ধরতে সক্রিয়, তখন উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক নীতি নিয়ে তাদের অবস্থান জানানোর দায় রয়েছে কংগ্রেসেরও। এবং স্বাভাবিক ভাবেই সেই দায়িত্ব নিতে হচ্ছে তাঁকেই, আগামী যুদ্ধে ষিনি দলের মুখ। অর্থনীতি ও উন্নয়ন নিয়ে এর আগে রাহুলকে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। সে ক্ষেত্রে ভাবনার কেন্দ্রে ছিল ওই রাজ্যের উন্নয়ন। এটুকু বাদ দিলে এত দিন শুধু সংগঠন গোছানোর কথাই বলে এসেছেন রাহুল। এবং মূলত সেই কাজেই ব্যস্ত রেখেছেন নিজেকে। কংগ্রেসের সহসভাপতি পদে নিযুক্ত হওয়ার পর এই প্রথম জাতীয় স্তরের কোনও প্রকাশ্য সভায় তাঁর অবস্থান জানাতে চলেছেন তিনি।
অতীতে বিক্ষিপ্ত ভাবে আর্থিক সংস্কার, দুর্নীতি দমন ইত্যাদি প্রসঙ্গে মুখ খুললেও সার্বিক ভাবে আর্থিক ও সামাজিক সংস্কার নিয়ে কখনওই তাঁর মত সে ভাবে স্পষ্ট করে জানাননি রাহুল। সে দিক থেকে বরং অনেকটা এগিয়ে মোদী। তিনি তাঁর আর্থিক নীতি ও উন্নয়নের দাওয়াই ফেরি করতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছেন। ক’দিন আগেই দিল্লিতে শ্রীরাম কলেজে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। আগামী ৯ এপ্রিল যাচ্ছেন কলকাতায়। সেখানে শিল্পমহলকে জানাবেন, তাঁর শিল্পভাবনার কথা। ব্যাখ্যা করবেন লগ্নি টানার ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্যের কৌশল। গত জানুয়ারি মাসেই আমদাবাদে চনমনে গুজরাতের (ভাইব্র্যান্ট গুজরাত) ছবি তুলে ধরেছেন মোদী। সেই অনুষ্ঠানে দেশের অগ্রণী অনেক শিল্পপতিই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তাঁর।
সেই শিল্পপতিদের সামনে রাহুল এ বার কী দাওয়াই দেন, তা জানতে আগ্রহী দেশের শিল্প ও বণিক মহল। তাঁরা ভাবিত তাঁদের লগ্নি ও প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে। আগ্রহ বাড়ছে রাজনৈতিক মহলেও। কংগ্রেসকে আক্রমণের আগে রাহুলের অবস্থান ও কৌশল বুঝে নেওয়া প্রয়োজন বিজেপি ও অন্য বিরোধী দলগুলির। রাহুলের নিজের দলও জানতে চায়, শিল্প-অর্থনীতি-উন্নয়ন নিয়ে কী ভাবছেন তাদের আগামী যু্দ্ধের সেনাপতি।
সে দিন কী বলবেন রাহুল? তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, “মোদী বেশি জোর দিচ্ছেন শিল্প মহলের মন জোগানোর দিকে। রাহুল সওয়াল করবেন দেশের সার্বিক বৃদ্ধির পক্ষে।” ওই নেতার ধারণা, “ভারসাম্যের নীতির কথাই বলবেন রাহুল।” রাহুল যে আর্থিক সংস্কারের পক্ষে, তা তিনি আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে ভোট-প্রচারে গিয়ে খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ভর্তুকির অর্থ নগদে হস্তান্তরেরও পক্ষে। এই প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমে প্রকারান্তরে ভর্তুকি বাবদ বোঝা কমবে সরকারের। তবে এই সবের সঙ্গেই ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প, খাদ্য নিরাপত্তার মতো সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গও তুলে ধরবেন রাহুল। শিল্পমহলের কাছে শুধু নয়, গোটা দেশের কাছেই কংগ্রেসের দায়বদ্ধতার দিকগুলি তিনি তুলে ধরতে চান বলে মনে করছেন রাহুল-ঘনিষ্ঠ ওই নেতা। |
|
|
|
|
|