পশ্চিমবঙ্গের অন্তত তিন শতাংশ শিশু স্কুলে নামই লেখায়নি। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই প্রায় ৩০ শতাংশ স্কুলে। ১০টির মধ্যে ৬টি মেয়েদের শৌচাগারই ব্যবহারযোগ্য নয়।
শিক্ষা পরিকাঠামোর এমন হাল নিয়েই শিক্ষার অধিকার আইনের শর্ত পূরণ করার সময়সীমা পেরোল রাজ্য। ২০০৯ সালে পাশ-হওয়া আইনের ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল, কোনও স্কুলে যদি আইন-নির্দিষ্ট পরিকাঠামো না থাকে, তা হলে তিন বছরের মধ্যে তা সম্পূর্ণ করতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হল ৩১ মার্চ।
কিন্তু কতটা প্রস্তুত ভারতের রাজ্যগুলি? ৩১ মার্চ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ‘প্রথম’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা দেখাচ্ছে, শিক্ষার অধিকার আইনের আবশ্যিক শর্তগুলি পূরণ করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ-সহ নানা রাজ্য। তাদের সমীক্ষা, অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস এডুকেশন রিপোর্টে (আসার) দেখা যাচ্ছে, সবার চাইতে পিছিয়ে-পড়া রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গত বছরের শেষ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, আইন-নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত রয়েছে মাত্র ৩৩ শতাংশ স্কুলে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ১৭টি রাজ্যের নীচে।শিক্ষার অধিকার আইনের কেন্দ্রীয় ফোরামের সদস্য বিনোদ রায়নার বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গেই সর্বাধিক অ-প্রশিক্ষিত শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর মতে, আইনের শর্ত বলবৎ হলে পশ্চিমবঙ্গ সব চাইতে বেশি সমস্যায় পড়বে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিয়ে। তাঁর কথায়, “৩১ মার্চের পর পরিকাঠামোর ঘাটতিগুলি নিয়ে আদালতে কেউ অভিযোগ করলে সমস্যায় পড়বে রাজ্যর শিক্ষা দফতর।” এ বছর জানুয়ারির শেষে প্রকাশিত হয়েছে সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের ‘জয়েন্ট রিভিউ মিশন’-এর ১৫তম রিপোর্ট। তার তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে উচ্চপ্রাথমিক স্কুল এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ বিষয়ে ভারতে সব চাইতে পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। অধের্কেরও বেশি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যায় ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। প্রতি তিনটি স্কুলের একটিতে নেই প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ।
সমস্যার বহর কার্যত স্বীকারই করছে রাজ্যের সর্বশিক্ষা অভিযান দফতর। দফতরের এক আধিকারিক জানান, এখনও ছ’হাজারেরও বেশি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরি করা বাকি রয়েছে। তাই প্রাথমিক স্কুলগুলিতেই উচ্চ প্রাথমিকের ক্লাস শুরু করা হবে। নিয়োগ করা যাচ্ছে না শিক্ষকও, তাই অতিথি শিক্ষকদের দিয়ে পড়ানো হবে সেখানে। দফতরের দাবি, স্কুলের বাড়ি, শৌচাগার, শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ, আর পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, এই দুই কাজই ২০১৫-র মধ্যে শেষ হবে।
পঞ্চায়েত দফতরের পরিচালিত শিক্ষা কেন্দ্রগুলিরও দশা তথৈবচ। এগুলিতে দরিদ্র পড়ুয়াই বেশি। প্রায় সাড়ে তেরশো শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। ৫৭ মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (গড় ছাত্র সংখ্যা ২০০) নিজস্ব ভবন দরকার, বলছে রিভিউ রিপোর্ট।
শিক্ষার পরিকাঠামোর ত্রুটির ফলে ছাত্রছাত্রীদের কী দশা, তা ধরা পড়েছে রিভিউ মিশনের ‘ফিল্ড ভিজিট’-এও। সদস্যরা গ্রামে গিয়ে দেখেছেন, এক একটি উচ্চ প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষে বসেছে ৯০ জন পড়ুয়া। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলগুলি থেকে কত ছাত্র উচ্চ প্রাথমিকে আসতে পারে, ধারণা নেই শিক্ষকদের। প্রাথমিক স্কুলগুলির ছাত্র সংখ্যা বিষয়ে সার্কেল স্তরে
তথ্য সংগ্রহ করা ও প্রতিটি উচ্চ প্রাথমিকে তা পৌঁছে দেওয়ার উপর জোর দিয়েছে রিপোর্ট।
|
সকলের জন্য খাদ্য, বিনা সুদে কৃষিঋণ, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে ২০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রূপান্তরিত করা এবং তাতে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরি-সহ ছ’দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছে ফরওয়ার্ড ব্লক। শনি এবং রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “মে মাসের প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে ব্লক স্তরে ধর্না ও পিকেটিং করে দাবি সরকারের কানে ঢোকানোর চেষ্টা হবে।” |