বিনোদন সনৎ সিংহের জীবনাবসান
পুরনো কলকাতার পাড়ার জলসায় তিনি ছিলেন অপরিহার্য। আমেরিকা, কানাডা, লন্ডনেও ছড়িয়ে তাঁর গানের অনুরাগী। ছোটদের ছড়ার গানে তাঁর জনপ্রিয়তা এমনই মাত্রা পেয়েছিল যে বর্তমান প্রজন্মের বহু শিল্পী সে সব গেয়ে বাহবা কুড়িয়েছেন। রবিবার সকালে সেই সঙ্গীতশিল্পী সনৎ সিংহের জীবনাবসান হল। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন সনৎবাবু। তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে বর্তমান। সন্ধ্যায় বালির পাঠকঘাট শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এই সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, “বাংলা গানের স্বর্ণযুগের এক জন যশস্বী শিল্পী ছিলেন সনৎ সিংহ। শিল্পীর কণ্ঠে ছোটদের এবং ছড়ার গান বাংলা সঙ্গীতের সুমহান ঐতিহ্যকে সম্ৃদ্ধ করেছে।” মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রয়াত শিল্পীর দীর্ঘ সঙ্গীত সাধনাকে সম্মান জানাতে এ বছর তাঁকে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ প্রদান করার কথা ছিল। সনৎবাবুর প্রয়াণে নিজে সেই সম্মান শিল্পীর হাতে তুলে দেওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন।
সনৎ সিংহের মরদেহের পাশে শিল্পীরা।—নিজস্ব চিত্র
এ দিন দুপুরে শিল্পীর মরদেহ রবীন্দ্র সদনে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, হৈমন্তী শুক্ল, সৈকত মিত্র, ইন্দ্রনীল সেন-সহ অনেকেই। দ্বিজেনবাবু বলেন, “উনি যে ধরনের গান গাইতেন, সেই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেল।”
‘বাবুরাম সাপুড়ে’, ‘সরস্বতী বিদ্যেবতী’, ‘রথের মেলা’, ‘ঠিক দুক্কুরবেলা ভূতে মারে ঢিল’, ‘এক এক্কে এক’-এর মতো গানে শ্রোতাদের মনে আজও উজ্জ্বল সনৎবাবু। পরবর্তী কালে এই সব গানের রিমেক করেও অনেক শিল্পী বাহবা কুড়িয়েছেন। বাংলা ব্যান্ড-ও সনৎবাবুর কালজয়ী গানগুলিকে ব্যবহার করেছে। বাংলা ছবির গানের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন প্রয়াত শিল্পী। ‘সাড়ে ৭৪’, ‘হংস মিথুন’-এ তিনি গান গেয়েছেন। ভক্তিগীতিতেও পারদর্শী ছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ছড়ার গানেও সুর দিয়েছেন। সনৎবাবুর আদি বাড়ি হুগলির খানাকুলে। থাকতেন বালির দেওয়ান গাজি রোডে। সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয় চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে। তাঁর কাছেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন।
বালির বাসিন্দা ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যও তাঁর ‘সঙ্গীত-গুরু’ ছিলেন। ধনঞ্জয়বাবুর ভাই পান্নালাল ভট্টাচার্যের অভিন্নহৃদয় বন্ধু ছিলেন সনৎবাবু। তাঁর দাদা কিশোরীমোহনও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন।
এ বছর মার্চের প্রথম দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে শিল্পীকে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই এ দিন সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, বালি পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ী, সঙ্গীতশিল্পী দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় হাসপাতালে পৌঁছন। অরূপবাবুর ফোনে প্রয়াত শিল্পীর ছেলে প্রতাপ সিংহের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.