উত্তর ২৪ পরগনা
চা-মুড়ি খান, ভোটে দাঁড়াবেন না, প্রচারে তৃণমূল
বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে মুড়ি-চপের ঠোঙা নিয়ে যাবেন তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। দাওয়ায় বসে চা-মুড়ি খেতে খেতে গালগল্প জুড়বেন। আর মধ্যে মধ্যে বলবেন, পঞ্চায়েত ভোটে আপনাদের জেতার কোনও আশাই নেই। বরং মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিন। তাতেই দেশের-দশের মঙ্গল।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের আশা, এই ‘অনুরোধেই’ কাজ হবে। বিরোধীরা অনেকে জেলা পরিষদের প্রার্থিপদের লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবেন। জেলা পরিষদ দখলের লড়াই সহজ হবে তৃণমূলের পক্ষে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর ২৪ পরগনায় জেলা পরিষদের ৫৭টি আসনে এই কৌশলেই লড়বে তৃণমূল। কিন্তু এটা কি সুকৌশলে বিরোধীদের উপরে চাপ সৃষ্টি কিংবা হুমকি নয়?
বামেদের আশঙ্কা সেটাই। জেলা সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “ওরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই বানচাল করতে চাইছে। এই ভাবে বোঝানোর নামে হুমকি দেওয়া হবে বিরোধী প্রার্থীদের।” একই মত কংগ্রেসের। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সম্রাট তপাদার সরাসরিই বলেন, “এটা আসলে হুমকি দিয়ে প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা।”
অঙ্কন: সুমন চৌধুরী
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এতে ‘হুমকি’র উপাদান খুঁজে পাচ্ছেন না। সিপিএমের সঙ্গে কোনও রকম সংস্রব না রাখা নিয়ে কিছু দিন আগেও যিনি মুখর ছিলেন, সেই জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এখন অবশ্য সুর নরম করেছেন। তিনি বলেন, “হুমকির প্রশ্নই নেই। সে জন্যই তো মহিলাদের এই কাজে পাঠানো হবে। তাঁরা একবার নয়, প্রয়োজনে একাধিক বার সিপিএম-কংগ্রেস প্রার্থীদের বাড়িতে যাবেন। বোঝাবেন। বলবেন, সিপিএম-কংগ্রেস এত দিন ধরে অনেক খারাপ কাজ করেছে। মানুষ তাদের প্রত্যাখান করেছে। আপনাদের জেতার সম্ভাবনা নেই। ওঁদের প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করতে এ ভাবেই অনুরোধ করা হবে।”
কিন্তু যদি অনুরোধে কাজ না হয়?
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর জবাব, “সে ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের রাস্তা তো খোলাই থাকছে।” কিন্তু কেন এই পদক্ষেপ করতে চলেছে তৃণমূল? খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “জেলা পরিষদকে বিরোধী শূন্য করতে চাই। সে জন্য শুরু থেকেই এই চেষ্টা করা হবে। এটা অগণতান্ত্রিক কিছু নয়।”
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ভাল ফল করলেও জেলা পরিষদ দখল করতে পারেনি তৃণমূল। গত বার জেলা পরিষদের ৫১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১৬টি। কংগ্রেস পায় ৮টি। বাকি আসন গিয়েছিল বামেদের দখলে। জেলা তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, গত বছর জেলা পরিষদ দখলে সাংগঠনিক ভাবে ভাল প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। কিন্তু এ বছর আর সেই ভুল করতে চান না তাঁরা। জেলা পরিষদ দখলকে ‘পাখির চোখ’ করে এগোতে চান। জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা জানতে পারলেই তৃণমূলের স্থানীয় মহিলা কর্মীরা বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের বাড়িতে যাবেন। চা, মুড়ি খেয়ে গল্প করার ফাঁকেই ওই প্রার্থীকে ভোটে না লড়ার অনুরোধ করা হবে। চা-মুড়ির ফাঁকে অনুরোধ, না হুমকি কোনটা উড়ে আসে, সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকটা দিন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.