ভাড়া হচ্ছে বেঞ্চ, সাফ হচ্ছে গুদাম, আজ ‘টেট’ পরীক্ষা
কোথাও পরীক্ষার্থী বসার জায়গা নেই। কোথাও পরীক্ষাকেন্দ্রের ঠিকানাটাই ভুল। আবার কোথাও পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর ব্যবস্থাই নেই। আজ, রবিবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ‘টেট’ পরীক্ষার আগে সমস্যায় জেরবার পরীক্ষার্থী থেকে প্রশাসনের কর্তা সকলেই। পরীক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য কিছু কিছু সিদ্ধান্তও এ দিন নিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্তারা।
পশ্চিম মেদিনীপুর: জেলায় কিছু স্কুলের ঠিকানা ভুল দেওয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে। বড়মনোহরপুর হাইস্কুলটি বেলদা থানা এলাকায়। পর্ষদের সাইটে লেখা রয়েছে নারায়ণগড় থানা এলাকায়। গুড়গুড়িপাল হাইস্কুল কোতয়ালি থানা এলাকায়। সাইটে লেখা বেলদা থানা এলাকায়। ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলেন, “৩০ জোড়া বেঞ্চ বাইরে থেকে আনতে হয়েছে।” পাঁশকুড়ার একটি হাইস্কুলে বড় জোর ৯০০ জন বসতে পারেন। আসন পড়েছে ১৪৪০ জনের। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “পরীক্ষার্থীদের জন্য বেঞ্চ, পরীক্ষকদের জন্য চেয়ার-টেবিল আনলেও পরিদর্শক কোথা থেকে মিলবে জানি না।”
পূর্ব মেদিনীপুর: জেলায় ভুল ঠিকানার জন্য হয়রানিতে পড়েছেন আটটি পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ তড়িঘড়ি করে একটি সংবাদপত্রে ভুল ঠিকানা সংশোধন করে বিজ্ঞাপন দিলেও অনেক পরীক্ষার্থীই তা জানেন না। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি গোপাল সাহু বলেন, “যে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম-ঠিকানা নেই, তাদের জন্য বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয়ে একটি সংরক্ষিত পরীক্ষা কেন্দ্র করা হয়েছে। অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে গেলে তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন।”
মুর্শিদাবাদ: জেলায় সাতটি পরীক্ষা কেন্দ্রের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ওয়েবসাইটে সমসেরগঞ্জ থানা এলাকায় লস্করপুর-বালিয়াঘাটা হাইস্কুলটি প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের লালগোলা থানা এলাকায় রয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। অথচ লালগোলা থানা এলাকার লস্করপুরেই পৃথক একটি হাইস্কুল রয়েছে। সেখানেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। লালগোলার বিডিও প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “ওই আশঙ্কার কথা সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতরে জানানো হয়েছে।” একই ভাবে রঘুনাথগঞ্জ থানার খড়িবোনা হাইস্কুলকে ওয়েবসাইটে দেখানো হয়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দুরে ভগবানগোলা থানার নিকটবর্তী বলে। ডোমকল থানা এলাকার ভগীরথপুর হাইস্কুল ও বেলডাঙা থানা এলাকার হরেকনগর হাইস্কুলকে ওয়েবসাইটে বহরমপুর থানার নিকটবর্তী বলে দেখানো হয়েছে। জলঙ্গি থানা এলাকার বাঘমারা হাইস্কুলের অবস্থান হয়ে গিয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম থানা এলাকায়। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) আব্দুর রউফ বলেন, “ওয়েবসাইটে কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থানে ভুল রয়েছে। ওই ভুলের কথা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ভুল সংশোধনের চেষ্টা করছে।”
পুরুলিয়া: কোতোয়ালি থানা না থাকলেও কোটশিলা থানার একটি স্কুলের অবস্থান ভুল করে কোতোয়ালি থানা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাঁকুড়া: জেলায় বিষ্ণুপুর মহকুমা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধনকুমার নায়েক বলেন, “স্কুলে ৩৩০ জনকে বসতে দেওয়া যাবে। আসন পড়েছে ৪০০ জনের। তড়িঘড়ি করে পাশের দু’টি স্কুল থেকে বেঞ্চ আনাতে হয়েছে।” পরীক্ষার পরিদর্শনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “স্কুল শিক্ষকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কিছু আধিকারিক ও কর্মীদের থাকতে বলা হয়েছে।”
উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসত, বনগাঁ ও বসিরহাটে ২৫৩টি পরীক্ষাকেন্দ্র, প্রতিটিতে অন্তত দু’জন করে পুলিশকর্মী থাকার কথা। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কম। বারাসত মহকুমার একটি থানা এলাকায় পরীক্ষাকেন্দ্র ১৭টি। থানায় রয়েছে ২২ জন পুলিশকর্মী। এ রকম পরিস্থিতি কম-বেশি প্রত্যেকটি থানা এলাকাতেই। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মৃণাল ঘোষ বলেন, “যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে বলা হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “চেষ্টা করা হচ্ছে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রই পুলিশ মোতায়েন করার। সম্ভব না হলে ভ্রাম্যমাণ নজরদারির মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পাথরপ্রতিমা ব্লকের গদামথুরা হরিপ্রিয়া হাইস্কুলে ৪০০ জন পরীক্ষার্থী বসতে পারে। কিন্তু সেখানে ৫৯০ জনকে পরীক্ষা দিতে হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চলকুমার মাইতি জানিয়েছেন, গুদামঘর খুলে দিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.