ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, ফের প্রশ্নে নেট-সুরক্ষা
ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে এত দিন সরাসরি টাকা হাতিয়ে নিত জালিয়াতেরা। কখনও কখনও দামি গয়নাও কিনত। এ বার তাদের থাবা খাবারের ওয়েবসাইটে। সম্প্রতি বিদেশি ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে কয়েক হাজার টাকার খাবার কিনে বিধাননগর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে তিন যুবক। এই ঘটনায় ফের বেআব্রু ইন্টারনেট-সুরক্ষা।
পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের তরফে কার্ড জালিয়াতি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। জানা যায়, বিদেশি ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে এই জালিয়াতি চলছে। অভিযোগকারী ব্যাঙ্কটি সংশ্লিষ্ট বিদেশি ব্যাঙ্কের হয়ে এ দেশে লেনদেনে মধ্যস্থতার কাজ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বিদেশি ব্যাঙ্কের থেকে খবর পেয়েই তারা অভিযোগ জমা দেয়। পরে ফাঁদ পেতে আকাশ গৌতম, অমিত পাণ্ডে এবং ওমপ্রকাশ পাণ্ডে নামে তিন জনকে ধরা হয়। আকাশ একটি বেসরকারি কলেজের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের ছাত্র। বাকিরা বাণিজ্য শাখার স্নাতক। শনিবার ধৃতদের বিধাননগর এসিজেএম আদালতে ফের তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
কী করে হত এই জালিয়াতি?
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কলকাতায় অনলাইনে খাবার অর্ডার দেওয়ার এক ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রেস্তোরাঁর খাবার অর্ডার দেওয়া যায়। টাকা মেটাতে হয় নেট ব্যাঙ্কিং বা ক্রেডিট-ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে। জালিয়াতেরা বিদেশি ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দিয়ে সেখান থেকে খাবার কিনত। পরিচিতি গোপন করতে আলাদা আলাদা জায়গা থেকে খাবার নেওয়া হত। অর্ডার দেওয়ার সময়ে ঠিকানা উল্লেখ করে দিতে হয়। পরে ক্রেতার মোবাইল নম্বরে অর্ডার সংক্রান্ত তথ্য পাঠায় ওয়েবসাইটটি।
পুলিশকর্তারা বলছেন, নেট জালিয়াতিতে নানা ভাবে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়। কখনও কম্পিউটারে ‘ট্রোজান’ (এক ধরনের ভাইরাস) ঢুকিয়ে তথ্য চুরি করা হয়। কখনও বা ফোনে ঋণ দেওয়া বা কোনও জিনিস কেনার টোপ দিয়েও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা রয়েছে। তবে গোয়েন্দারা বলছেন, কার্ড জালিয়াতির সাম্প্রতিকতম উদাহরণ কার্ড ‘স্কিমিং’ (তথ্য হাতিয়ে অবিকল নকল কার্ড বানানো)। মাস কয়েক আগেই কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখা এই ধরনের একটি চক্রকে ধরে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী ভাবে সেই তথ্য হাতানো হয়েছে, সে বিষয়টি নিয়ে এখনও অন্ধকারেই রয়েছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও কোনও কার্ড বা জোরদার তথ্যপ্রমাণ উদ্ধার হয়নি। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ধৃতেরা এই চক্রের মাথা নয়। এই চক্রে আরও কয়েক জন জড়িত বলে সন্দেহ। আসল চাঁইরা এখনও অধরাই।
প্রশ্ন উঠেছে, এ ধরনের সাইটে ক্রেতাদের তথ্য-সুরক্ষা নিয়েও। যদিও ওয়েবসাইটের কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের সাইটে ক্রেতাদের তথ্য সুরক্ষিত। বিশেষজ্ঞেরাও বলছেন, অনলাইনে কেনাবেচা এড়ানো যাবে না। সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গ্রাহকেরা অসতর্ক ভাবে নিজেদের ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের তথ্য অপরিচিত লোককে জানিয়ে দেন। তার ফলেই এই ধরনের জালিয়াতির শিকার হন তাঁরা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.