|
|
|
|
কত আসনে লড়াই, ধন্দ সত্ত্বেও ঐক্যে জোর দিচ্ছেন বিমান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে ‘সন্ত্রাসে’র পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয় বলে জেলার সিপিএম নেতারা আলিমুদ্দিনকে একাধিক বার জানিয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, “বামফ্রন্ট রাজ্যের সব আসনে লড়বে।” পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র পেশের আগে নিচু তলার বাম নেতা-কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতেই বিমানবাবুর এই ঘোষণা বলে বাম শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা। বিমানবাবু বলেন, “বামেরা সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না সংবাদমাধ্যম বলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও বাম নেতা প্রকাশ্যে এ কথা বলেননি। পঞ্চায়েত ভোটে সব আসনেই বামফ্রন্ট লড়বে।”
বামেরা কত আসনে প্রার্থী দিতে পারল, তা মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষের পরেই স্পষ্ট হবে। বহু জায়গাতেই জেলা স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেখানে বামেরা প্রার্থী দিতে পারবে না সেখানে নির্দল প্রার্থী, এমনকী, বিজেপি বাদে তৃণমূল-বিরোধী অন্য প্রার্থীকেও সমর্থন করা যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে আলিমুদ্দিন কোনও কথা বলতে নারাজ।
কত আসনে বামেরা প্রতীক চিহ্নে প্রার্থী দিতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও অন্য বারের তুলনায় এ বার যে ফ্রন্টের ঐক্য অনেক বেশি, সব শরিক দলের নেতারাই তা বলছেন। কেবল বিমানবাবুই নয়, এ দিন বামফ্রন্টের বৈঠকে উপস্থিত আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি, সমাজবাদী পার্টির জন্মেজয় ওঝা সকলেই জানিয়েছেন, অধিকাংশ জেলাতেই সার্বিক ঐক্য হতে চলেছে। বৈঠকের পরে জেলাওয়াড়ি হিসাব দিয়ে বিমানবাবু বলেন, “সব জেলাতেই দু’এক জায়গায় খিঁচ ছাড়া সার্বিক ঐক্য হয়েছে।” তাঁর দাবি, যে সব জায়গায় ঐক্য নিয়ে অসুবিধা রয়েছে, তা-ও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে মিটে যাবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার আসনে বামফ্রন্টের মধ্যে সার্বিক ঐক্য হয়নি। এ বার সংখ্যাটি এক হাজারের নীচে নামবে বলে সিপিএম-সহ শরিক নেতারা মনে করছেন।
কোচবিহার, বীরভূম, বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনা বা হাওড়া জেলায় সিপিএমের সঙ্গে ফ ব-র ঐক্য প্রায় সারা। তহে পুরুলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের সমস্যা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে সরব হয়েছিলেন ফ ব-র নরেন চট্টোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ি জেলায় আরএসপি-র সঙ্গে ঐক্য প্রায় হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সিপিএম-আরএসপি আলোচনা চলছে। বিমানবাবু এবং ক্ষিতিবাবু দু’জনেরই ধারণা, জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে পুরোপুরি ঐক্য হবে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কিছু আসনে অবশ্য দু’পক্ষে টানাপোড়েন চলছে। গত বার পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিআইয়ের সঙ্গে সিপিএমের ঐক্য হয়নি। এ বার সেখানে সম্পূর্ণ ঐক্য হবে বলে সিপিআই নেতা মঞ্জুবাবু মনে করছেন। তবে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমায় সমস্যার কথা বলেছে তারা। বিমানবাবু শরিক নেতাদের বলেছেন, যেখানে সমস্যা কাটছে না, তা নিয়ে আলিমুদ্দিনে লিখিত রিপোর্ট দিতে। তবে সার্বিক ঐক্য গড়ে তোলার ব্যাপারে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের ‘নমনীয়’ মনোভাবে শরিক নেতারা মোটামুটি খুশি। পঞ্চায়েত ভোটের খসড়া ইস্তাহার নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার পুনরায় বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
চাভেসের স্মরণ-সভা নিয়ে ক্ষোভ: নজরুল মঞ্চে উগো চাভেসের স্মরণসভায় মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক, সমাজবাদী পার্টির মতো বামফ্রন্টের ছোট শরিক এবং আমন্ত্রিত সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন ও অন্য নকশালপন্থীদের কিছু বলতে না-দেওয়া নিয়ে ফ্রন্টের সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিপিআই নেতা মঞ্জুবাবু। তিনি বলেন, আমন্ত্রিতদের প্রত্যেককেই কিছু বলতে দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, সকলেই চাভেসের শোক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। মঞ্জুবাবুর মতে, এতে বৃহৎ বাম ঐক্য ধাক্কা খেল। বৈঠকে বিমানবাবু অবশ্য পাল্টা বলেন, আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল প্রত্যেককে বলতে দেওয়া হবে না। কারণ তা সম্ভব ছিল না। সভায় এসইউসি-র না আসার প্রসঙ্গও ওঠে। বিমানবাবু জানান, তিনি দলের জাঠায় ব্যস্ত থাকায় এসইউসি-র সঙ্গে ঠিক মতো যোগাযোগ হয়নি। |
|
|
|
|
|