অপহরণের ‘নাটকীয়’ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ধুলিয়ান পুরসভার ফরওয়ার্ড ব্লকের কাউন্সিলর তুষারকান্তি সেন। এ মাসের গোড়াতেই ওই পুরসভার ৯ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে গিয়েছিলেন। বাম শরিক ফব-র কাউন্সিলরকে পেয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে অধীর চৌধুরীর জেলায় একটি পুরসভার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিল তৃণমূল।
তৃণমূলের লোকজন মঙ্গলবার রাতে তুষারবাবুকে অপহরণ করে বলে সিপিএম এবং ফব-র তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই মতো সামশেরগঞ্জ থানায় অপহরণের একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ‘অপহৃত’ কাউন্সিলর নিজেই স্বীকার করেন, “আমাকে অপহরণ করেনি। গত চার মাস থেকে ধুলিয়ানের সমস্ত উন্নয়ন থমকে রয়েছে।” তুষারবাবুর দাবি, “তৃণমূল বোর্ড দখল করবে এবং আমি তার চেয়ারম্যান হব!”
মুর্শিদাবাদ জেলার ১৯ সদস্যের ধুলিয়ান পুরসভায় বর্তমানে ১০ বামফ্রন্ট কাউন্সিলরের মধ্যে ৮ জন সিপিএমের, দু’জন ফব-র। বাকি ৯ জন কংগ্রেসের প্রতীক চিহ্নে জয়ী হয়ে ২ মার্চ তৃণমূলে যোগ দেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে পুর-সভায় চেয়ারম্যান নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এই অবস্থায় ফব কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুরসভার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে গেল। ওই পুরসভায় ৩০ নভেম্বর থেকে চেয়ারম্যান নেই। ভাইস চেয়ারম্যান, অধুনা তৃণমূলের দিলীপ সরকার জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কাজ সামলাচ্ছেন।
সিপিএমের ধুলিয়ান লোকাল কমিটির সম্পাদক মহম্মদ আজাদ আলি বলেন, “তুষারবাবু পেশায় রেশন ডিলার। তাই তৃণমূলের লোকজন ভয় দেখিয়ে তাঁকে দলে যোগ দিতে বাধ্য করেছে।” ফব-র জেলা সভাপতি ইউসুফ হোসেন বলেন, “ভয় দেখিয়ে আমাদের দলীয় কাউন্সিলরকে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।” ফব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায়েরও অভিযোগ, “বাড়ি ফেরার পথে তুষারবাবুকে অপহরণ করে নিজাম প্যালেসে মুকুলবাবুর কাছে হাজির করানো হয়েছিল।” ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপবাবু অবশ্য বলেন, “তুষারবাবু বাচ্চা ছেলে নন! বামেদের প্রতি বিতৃষ্ণায় তিনি তৃণমূলে স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছেন। তাঁকে চেয়ারম্যান করা হবে কি না, দল সিদ্ধান্ত নেবে।”
মুকুলবাবু এ দিন তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে তুষারবাবুর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে বলেন, “ধুলিয়ান পুরসভায় আজ থেকে তৃণমূল বোর্ড দখল করল।” তুষারবাবু এ দিনই সরকারি ভাবে জেলাশাসককে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তৃণমূলের কাউন্সিলর হিসাবেই কাজ করবেন। |