তিস্তা, জমি বিল নিয়ে মমতার সমর্থন চান মনমোহন
ডিএমকে-র জোট ছেড়ে চলে যাওয়া এবং মুলায়ম সিংহ যাদবের উল্টো সুরে গাওয়া শুরু হওয়ার পরে সরকারের যে সঙ্কট রয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। এই পরিস্থিতিতে পুরনো বন্ধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য ‘প্রার্থনা’ করলেন তিনি। আজ ডারবান থেকে ফেরার পথে বিশেষ বিমানে সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তিস্তা চুক্তি এবং জমি বিলের ব্যাপারে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন প্রার্থনা করছি। আমার আশা এবং প্রত্যাশা, এই সমর্থন পাব।” তবে তিস্তা চুক্তি এবং জমি বিলের কথা বললেও অনেকের মতে, সামগ্রিক ভাবেই যে তৃণমূল নেত্রীকে তাঁর দরকার, সে কথাই বোঝাতে চেয়েছেন মনমোহন।
প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে তাঁর সরকারের সঙ্কটের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন, তা-ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “জোট চালানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু সমস্যা রয়েছে। কখনও মনে হয়, যে এটা খুব স্থিতিশীল ব্যবস্থা নয়। এবং (কেউ ইউপিএ-র উপর থেকে সমর্থন তুলে নিতে পারে) এমন সম্ভাবনা যে রয়েছে, সেটা আমি অস্বীকার করতে পারি না।”
পরে সংস্কারের প্রশ্নেও সেই সঙ্কটের পুনরুক্তি করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এই সত্যিটা স্বীকার করে নিতেই হবে যে সংসদে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে সংস্কারের প্রশ্নে আমাদের জোটসঙ্গীদের সদিচ্ছার উপরে নির্ভর করতেই হচ্ছে। আর এই ব্যাপারে যে অনিশ্চয়তা নেই, এমন কথা আমি বলতে পারি না।”
ডারবান থেকে ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি। ছবি: পিটিআই
এই রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা বলার পাশাপাশি তাঁর সরকার পুরো পাঁচ বছর চলবে বলেই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলেছেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব বলেই আমি নিশ্চিত।”
কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা যে তাঁদের চিন্তায় রাখছে তা কবুল করছেন অনেক কংগ্রেস নেতাই। আর তা থেকেই বন্ধু বাড়ানোয় নজর দিয়েছেন তাঁরা। আর্থিক প্যাকেজের আশ্বাসে নীতীশ কুমারের মন জয়ের চেষ্টা হয়েছে। মমতাকে একই দিনে ফোন করেছেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কমল নাথ ও জয়রাম রমেশ। সম্প্রতি একশো দিনের কাজে টাকা মঞ্জুর করে রাজ্যকে স্বস্তিও দিয়েছেন জয়রাম। অন্য দিকে, ডিএমকে ইউপিএ ছাড়ার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকেও স্বস্তিতে রেখেছেন মমতা।
কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন, দূরত্ব কমানোর তাগিদ মমতারও রয়েছে। কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়া লোকসভা ভোটে তৃণমূলের পক্ষে যে আশানুরূপ ফল করা সম্ভব নয়, সেটা রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে। ফলে মমতার পক্ষে থেকেও তাঁদের কাছে ইতিবাচক ইঙ্গিত আসছিল বলে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি।
কিন্তু জোটসঙ্গীদের কেন ধরে রাখতে পারছে না কংগ্রেস? এটা কি নেতৃত্বের ব্যর্থতা? মনমোহন অবশ্য এ দিন সেই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর ব্যাখ্যা, জোটসঙ্গীদের নিজস্ব রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে।
সম্প্রতি কংগ্রেসে ক্ষমতার দুই কেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বর্ষীয়ান নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে সওয়াল করে তিনি বলেছেন, এই ব্যবস্থায় কংগ্রেসের ভাল হয়নি। সে ক্ষেত্রে মনমোহন কি ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকছেন? মনমোহনের জবাব, “এ নিয়ে কথা বলার সময় আসেনি।” যা শুনে অনেকেরই মন্তব্য, নিজেকে দৌড়ের বাইরে রাখলেন না কৌশলী মনমোহন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.