এ বার বদলাবে ছবি, দাবি কেন্দ্রের
চলতি খাতে রেকর্ড ঘাটতি
দেশে ডলার আসা-যাওয়ার মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা ফাঁকই যে তাঁর মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ, বাজেট বক্তৃতাতেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন পালানিয়প্পন চিদম্বরম। অর্থমন্ত্রীর সেই আশঙ্কাকে সত্যি করেই রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গেল চলতি খাতে বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট)। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে তা দাঁড়িয়েছে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৬.৭%। তার আগের তিন মাসে যা ছিল ৫.৪%। এ নিয়ে এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সংখ্যার বিচারে এই ফাঁক অবশ্যই বড়। কিন্তু তা বলে অপ্রত্যাশিত নয়। তা ছাড়া, অর্থনীতির এই সমস্যা আগাম আঁচ করে দেশে আরও বেশি করে ডলার আসার পথ প্রশস্ত করতে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে তারা। কিছুটা হলেও যার সুফল বোঝা যাবে মার্চ ত্রৈমাসিকে। দীর্ঘ দিন বাণিজ্য ঘাটতি চলার পর শেষ পর্যন্ত গত দু’মাসে আমদানিকে ছাড়িয়ে গিয়েছে রফতানিও। ধীরে ধীরে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নির খরা কাটতে শুরু করেছে শেয়ার বাজারে। ফলে সব মিলিয়ে, পরের তিন মাসে এই ঘাটতি বেশ কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী চিদম্বরমের মন্ত্রক।
কোনও দেশের অর্থনীতিতে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা (এ ক্ষেত্রে ডলার) আসছে, তার তুলনায় যদি তা বেশি বেরিয়ে যায়, তবে সেই ফারাকই হল চলতি খাতে বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘাটতি। রাজকোষ ঘাটতির থেকেও আপাতত এই ঘাটতিই যে তাঁর চিন্তার বড় কারণ, অনেক আগেই তা জানিয়ে দিয়েছেন চিদম্বরম। বাজেটের পর গুগ্ল প্লাসে নেট-নাগরিকদের মুখোমুখি হয়েও তিনি বলেছিলেন এই ঘাটতি মেটানোর মূল উপায় তিনটি
(১) আমদানি কমানো
(২) রফতানি বাড়ানো অথবা
(৩) বিদেশি লগ্নি টানা।
কিন্তু সমস্যা হল, তেল, গ্যাস বা কয়লার মতো পণ্যের আমদানি চট করে কমানো কঠিন। ইউরোপ-সহ উন্নত দুনিয়ার বেহাল অর্থনীতির জেরে লাফিয়ে বাড়া মুশকিল রফতানি। ওই একই কারণে কেন্দ্র সংস্কারের বেশ কিছু ঘোষণা করার পরও চোখে পড়ার মতো প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এখনও এ দেশে আসেনি। শেয়ার বাজারে লগ্নি করার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলিও। তাই এই পরিস্থিতিতে ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে ওই ঘাটতি বাড়া এক রকম অবধারিত ছিল বলে মনে করছেন অনেকে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অর্থনীতির এই অসুখ সারাতে ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়েছেন চিদম্বরম। যেমন, সোনা কেনা কমাতে দেশের সাধারণ মানুষকে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। আবার দেশে আরও বেশি করে ডলার আনতে জোর দিয়েছেন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ টানার উপর। একই কারণে সম্প্রতি আরও মসৃণ করেছেন ঋণপত্রের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ডলার আসার পথও। আগামী দিনে কিছুটা হলেও এ সব কিছুর সুফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তাঁরা। তা ছাড়া, ঘাটতি কমাতে আরও পদক্ষেপ করার কথা আজ জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
তবে রেকর্ড ঘাটতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শিল্পমহল। রফতানি চাঙ্গা করতে অবিলম্বে কেন্দ্রের পদক্ষেপ দাবি করেছে তারা। এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল খোঁজার উপর জোর দিয়েছেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়াও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.