শিলিগুড়ি পুরসভার ‘বিতর্কিত’ চেয়ারম্যান নান্টু পাল কংগ্রেসে আছেন কি না তা আগামী সোমবারের মধ্যে তাঁর আইনজীবীদের জানানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস ওই আদেশ দেন। ১৯ মার্চ শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত নান্টুবাবুর দলীয় অবস্থান জানা যাচ্ছে না বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মেয়র উচ্চ আদালতে জানান, নান্টুবাবুকে তিন বার চিঠি দিয়ে তিনি কোন দলে রয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন। নান্টুবাবু কোনও জবাব দেননি। এর পরে মেয়র দার্জিলিঙের জেলাশাসকের কাছে চিঠি দিয়ে নান্টুবাবু কোন দলের সদস্য হিসেবে পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েছেন সেটা জানতে চান। সেখান থেকেও জবাব পাননি বলে তাঁর দাবি। তার পর মেয়র কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রথম শুনানির সময়ে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ও নান্টুবাবুর আইনজীবীরা। উপস্থিত ছিলেন সরকারি আইনজীবীও। বিচারপতি নির্দেশ দেন, নান্টুবাবু কংগ্রেসে রয়েছেন কি না তা উচ্চ আদালতকে জানাতে হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন নান্টুবাবু। দল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনও চিঠি দেননি কংগ্রেসকে। নান্টুবাবুর বিরুদ্ধে বামেরা অনাস্থা আনলে তিনি অপসারিত হন। পরে তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নান্টুবাবু ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু, পুরসভায় ভোটাভুটি কিংবা সভার জন্য ন্যূনতম যে কজন কাউন্সিলরের উপস্থিতি প্রয়োজন, তা না-থাকা সত্ত্বেও নান্টুবাবুকে তৃণমূল একতরফা ভাবে চেয়ারম্যান পদে জিতিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। নান্টুবাবুর চেয়ারম্যান পদের বৈধতা নিয়েও উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন পুরসভার মেয়র। এই ব্যাপারে নান্টুবাবু বলেন, “আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে পাইনি। পেলে নিশ্চয়ই জবাব দেব।”
এ দিন পুরসভা চালাতে প্রতি পদে তৃণমূল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার অভিযোগ করেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব ক্ষমতার অপব্যবহার করে নান্টুবাবুকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছেন। এডিএম ডিএম দের নানাভাবে প্রভাবিত করছেন। তাই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হবে।” গৌতমবাবু অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “পুরসভার পরিষদীয় দলনেতা তথা কাউন্সিলর হিসেবে সামান্য সময় ছিলাম। কাউকে প্রভাবিত করার কোন বিষয় নেই। তবে মামলা করার অধিকার সকলেরই আছে।” |