জীর্ণ সেতুতে যান চলাচল বন্ধ ডেবরায়
সেতু রয়েছে। কিন্তু তা এতই জরাজীর্ণ যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। সংস্কারের অভাবে এই হাল ডেবরার পলাশি সেতুর। পরিস্থিতি দেখে সেতু দিয়ে ছোট-বড় সব গাড়িরই চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। চলে শুধুমাত্র সাইকেল। যাতায়াতের জন্য পাশে বিকল্প একটি রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তা দিয়েই সব গাড়ি চলে। সেতু সংস্কারের দাবিতে বহুবার সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন দফতরে দরবার করা হয়েছে। তবে সুরাহা হয়নি।
সমস্যার কথা মানছে প্রশাসনও। ডেবরার বিডিও মালবিকা খাটুয়া বলেন, “সেতু সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। ঠিক কী পরিস্থিতি, খতিয়ে দেখছি।” ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “পলাশির সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। আগেও একবার সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কাঠের সেতুর বদলে পাকা সেতুর পরিকল্পনা করা হয়। তবে সেই সময় আর কাজ এগোয়নি। ফের নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে।” ডেবরার আষাড়ি থেকে পিংলার দিকে যে রাস্তা চলে যাচ্ছে, তার উপরই রয়েছে পলাশির এই সেতু। আষাড়ির পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে, ওই রাস্তার একদিকে জাতীয় সড়ক। অন্যদিকে পিংলার নয়া। আষাড়ি-পিংলা রাস্তাটি সব দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। পলাশির অদূরেই রাধামোহনপুর। এখানে স্টেশন রয়েছে। হাইস্কুল রয়েছে। আশপাশে মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র-প্রাথমিক স্কুলও রয়েছে।
এমনই বেহাল পলাশির সেতু।—নিজস্ব চিত্র।
এই রাস্তার উপর দু’টি সেতু রয়েছে। একটি পলাশিতে। অন্যটি চকবাসু খাসবাজার এলাকায়। এক সময় চকবাসু খাসবাজারের সেতুটিও সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। যে কোনও সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। শেষমেশ স্থানীয় মানুষের দাবি মেনে কয়েক বছর আগে কাঠ সরিয়ে পাকা সেতু তৈরি করা হয়। কাজ করে পূর্ত দফতর। পরিকল্পনা ছিল, এরপরই পলাশির সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হবে। তবে সেই মতো কাজ এগোয়নি। তৃণমূলের অভিযোগ, বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই সেতুটি জীর্ণ হয়ে পড়ে। গাড়ি চলাচলের অযোগ্য হয়ে ওঠে। অথচ, সেতু সংস্কারের পদক্ষেপ করা হয়নি। স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা চন্দন ঘোড়ই বলেন, “আগে সেতু সংস্কারের ব্যবস্থা করা হলে পরিস্থিতি এত খারাপ হত না। সেতুর উপর গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাতায়াতের জন্য পাশে যে রাস্তা রয়েছে, সেটাই এখন ভরসা।” দ্রুত সেতু সংস্কারের দাবি তুলেছেন পলাশির বাসিন্দা বৈদ্যনাথ শর্মা, শঙ্কর পালরাও।
পলাশিতে যে সেতুটি রয়েছে, সেটি কাঠের। লোহার রডের উপর কাঠ বসানো রয়েছে। আগে মাঝেমধ্যে পুরনো কাঠ সরিয়ে নতুন কাঠ বসানো হত। এখন তাও বন্ধ। কেন আগে সেতু সংস্কার হয়নি? ডেবরার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক জাহাঙ্গির করিমের কথায়, “ওই রাস্তায় দু’টি সেতু রয়েছে। দু’টিই সংস্কার করা প্রয়োজন ছিল। সেই মতো পরিকল্পনা করা হয়। একটি সেতু পাকা হয়েছে। তবে বিধানসভা নির্বাচন চলে আসায় অন্য সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করা যায়নি।” তিনিও মানছেন, “পলাশির সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত। না হলে পরবর্তীকালে স্থানীয় মানুষ সমস্যায় পড়বেন।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, স্রেফ উদ্যোগের অভাবে সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে না। ছোট-বড় বহু গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। সেতুটি ভেঙে পড়লে বিকল্প রাস্তাও ব্যবহার করা যাবে না। তখন আরও সমস্যা হবে। ব্লক প্রশাসন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, সেতুর হাল ফেরানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে নতুন করে পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। কোন তহবিলের টাকায় কাজ শুরু করা যায়, তা দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের এই আশ্বাসই ভরসা পলাশির মানুষের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.