|
|
|
|
পথের ক্লান্তি ঝেড়ে কিউবায় কারাট-দম্পতি, গুঞ্জন দলেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
টানা অনেক দিন পথের ক্লান্তি ছিল। এক শহর থেকে আর এক রাজ্য, এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্য ঘুরে জাঠা নিয়ে যেতে হয়েছে। সে সব ধকল মিটে যেতে এ বার যুগলে ফিদেল কাস্ত্রোর দেশে সিপিএমের প্রথম পরিবার!
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ও তাঁর স্ত্রী বৃন্দা আট দিনের সফরে আপাতত কিউবায়। দলের কাজে এই প্রথম সহধর্মিণীকে নিয়ে বিদেশ সফরে কারাট। ব্যক্তিগত স্তরে ছুটি কাটাতে তাঁরা অনেক জায়গায় গিয়েছেন। কিন্তু দলের কর্মসূচিতে, সিপিএমের প্রতিনিধি হয়ে সাধারণ সম্পাদক সস্ত্রীক বিদেশে গিয়েছেন এমন নজির কমিউনিস্ট পার্টিতে নেই! তাই ভ্রূকুঞ্চিত হচ্ছে দলেরই একাংশের!
প্রকাশের পূর্বসূরি হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ কখনওই দলের তরফে বিদেশ সফরে স্ত্রীকে নিয়ে যাননি। এমনকী, প্রকাশ নিজেও অতীতে কখনও যাননি। দলে তাঁর এক সহকর্মী উদাহরণ দিচ্ছেন, এক বার চিন-সফরে প্রকাশের সঙ্গী ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুভাষিনী আলি। লন্ডনে কারাট বহু বার গিয়েছেন একাই। আবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সফরে সঙ্গী থেকেছেন অন্য সহকর্মীরা। দলের এই অংশের বক্তব্য, গোটা পৃথিবীতে কমিউনিস্ট পার্টির কোনও সাধারণ সম্পাদক বা পলিটব্যুরো সদস্যের সস্ত্রীক সফরের দৃষ্টান্ত বলতে মনে পড়ে একটাই। সোভিয়েত ইউনিয়নের মিখাইল গোর্বাচভের স্ত্রী রাইসা। |
|
—ফাইল চিত্র |
বৃন্দা নিজেও সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য। সাধারণ সম্পাদক যেমন কলকাতা থেকে দিল্লি পূর্বাঞ্চলীয় জাঠার নেতৃত্বে ছিলেন, তেমনই অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগ থেকে রাজধানী পর্যন্ত উত্তরের জাঠার দায়িত্ব ছিল সিপিএমের ‘ফার্স্ট লেডি’র হাতে। জাঠার শেষে রামলীলা ময়দানের সমাবেশ, পলিটব্যুরোর বৈঠক এ সব মিটিয়ে রবিবার বেশি রাতে লন্ডনের উড়ান ধরেছেন কারাট-দম্পতি। সেখান থেকে আবার রিচার্ড ব্র্যানসনের সংস্থার উড়ানে হাভানা। একেবারে বিপ্লবের খাস তালুক! পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে বৃন্দা কি দলের তরফে এমন সফরে যেতে পারেন না? ঘটনাচক্রে তিনি না হয় সাধারণ সম্পাদকের ঘরণী! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “শুধু ঘটনাচক্র হিসাবে দেখলে চলবে কেন? পলিটব্যুরোর আরও ১৪ জন সহকর্মীর মধ্যে কিউবায় যাওয়ার জন্য একমাত্র ওঁকেই পেলেন সাধারণ সম্পাদক, এটা একটু বাড়াবাড়ি না? একটা কথা আছে, সিজার-পত্নীকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকতে হয়!”
অর্থাৎ তার জন্য পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দাকে একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হলে হবে, বলতে চাইছেন এই নেতারা! সিপিএমের তরফে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা, দলের বিবেচনা সাপেক্ষে নেতা-নেত্রীরা এমন কর্মসূচিতে যেতেই পারেন। কিন্তু দলেরই একাংশ এত সরল ব্যাখ্যা মানতে নারাজ! ওই অংশের নেতাদের মতে, বৃন্দা সিপিএমের আন্তর্জাতিক বিভাগের কেউ নন। যে শাখার তিনি দায়িত্বে, সেই সংক্রান্ত কোনও কর্মসূচির জন্যও কিউবায় যাননি। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর ছুটি কাটাতে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সাধারণ সম্পাদকের ঘরের লোক না-হলে সিপিএমের সর্বক্ষণের কোনও কর্মী বা পলিটব্যুরো সদস্য ওই ভাবে বিদেশ যেতে পারতেন কি? প্রশ্ন উঠেছিল তখন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকাতেও প্রশ্ন তাড়া করছে! অন্য যুক্তিতে! |
|
|
|
|
|