আগামী ৪ এপ্রিল থেকে পাকিস্তানে নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে। তার সপ্তাহ দু’য়েক আগেই দুবাই চলে গেলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির ‘স্টার ক্যাম্পেনার’ বিলাবল ভুট্টো জারদারি।
যদিও, আনুষ্ঠানিক ভাবে বলা হচ্ছে নিরাপত্তার খাতিরে পাকিস্তান ছেড়ে যেতে হয়েছে বিলাবলকে। তবে জারদারি পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বাবা আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে দলের নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধের জেরেই পাকিস্তান ছেড়েছেন বিলাবল।
বেশ কিছু দিন ধরেই বাবা এবং দিদি ফরিয়াল তালপারের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না বিলাবলের। দেশের নানা বিষয়ে ইমরান খানের দল যেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচার চালাচ্ছে, সেখানে পিপিপি-র নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে বার বারই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিলাবল। সেই থেকেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। গত বছর মালালা ইউসুফজাইয়ের উপর তালিবানের হামলা নিয়ে বিশেষ সরব হয়নি পিপিপি। কোয়েটা এবং করাচিতে তিনটি বিস্ফোরণে ২৫০ জন নিহত হওয়ার পরেও নীরবতা অবলম্বন করেছিল পাকিস্তানের বর্তমান শাসক দল। আর এই বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করেই নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। এই পর্যন্ত তবু ছিল এক রকম। গত মাসে বিলাবল প্রায় ২০০ জন দলীয় কর্মীকে চাকরি দেওয়ার অনুরোধ করেন সিন্ধু প্রদেশের প্রাক্তন প্রধান কামিম আলি শাহকে। আর তাতে বাধা দেন বিলাবলের দিদি। এর পরে দলের রাশ তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হোক, বাবার কাছে আবেদন জানান ক্ষিপ্ত বিলাবল। তবে আসিফ আলি জারদারি মেয়েরই পক্ষ নেন। আর তাতেই ঘি পড়ে আগুনে। |
বিশেষ সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট জারদারি ছেলেকে স্পষ্ট জানান রাজনৈতিক ভাবে তিনি যত দিন না পরিণত হয়ে উঠছেন, তত দিন পর্যন্ত দলের শাসনভার তাঁর হাতে তুলে দেওয়া কোনও মতেই সম্ভব নয়। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন বিলাবল। তার পরেই গত সপ্তাহে চলে যান দুবাই।
ওই সূত্র জানাচ্ছে, দলের নিষ্ক্রিয়তায় এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিলাবল যে যাওয়ার আগে বাবাকে বলে গিয়েছেন, “আমি ভোট দিলে কখনওই পিপিপি-কে দিতাম না।”
পারিবারিক সংঘাতের কথা মুখে স্বীকার করা না হলেও বিলাবল যে দেশ ছেড়ে গিয়েছেন তা অবশ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আর এর প্রভাব পিপিপি-র উপর কতটা পড়বে তা নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কায় রয়েছেন দলের কর্তাব্যক্তিরা। কারণ, বিলাবল ছাড়া দলে তেমন জনপ্রিয় মুখ প্রায় কেউ নেই বললেই চলে। আদালতের নির্দেশের ফলে নির্বাচনী প্রচারে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলি জারদারি। বাকি রইলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। তিনি তেমন জনপ্রিয় নন। ৪ মে গারহি খুদা বক্স এলাকা থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল পিপিপি-র নির্বাচনী প্রচার। নিঃসন্দেহে তার মূল আকর্ষণ ছিলেন বিলাবল। বেনজির ভুট্টোর ছায়া হিসেবে বিলাবলকেই পছন্দ পাকিস্তানবাসীর। তিনি না থাকলে পিপিপি-র কট্টরপন্থী সমর্থকদের মন জয় করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা দলের নেতাদের।
পিপিপি-র মুখপাত্র কামার জামান কাইরার দাবি, এ সব গুজব। নিরাপত্তার খাতিরে দেশ ছেড়েছেন বিলাবল। ফোন কিংবা ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বক্তৃতা দেবেন। |