বেআইনি ভাবে নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান শহরের একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে। পুরসভার কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন জমি মালিকেরা। পুরসভা নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ওই জায়গায় ১১৪ ধারা জারি করেছে আদালত। তবু ক্লাবের সদস্যেরা নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জমিমালিকদের অভিযোগ।
শহরের শূলিপুকুরে একটি পুরনো বাড়ি ভাড়া নিয়েছে ওই ক্লাব। তার সদস্যদের দাবি, সম্প্রতি রাজ্য যুবকল্যাণ দফতর থেকে জিমন্যাসিয়াম তৈরির জন্য তাঁরা দু’লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছেন। তা তৈরি করতে ওই বাড়ির দেওয়াল তিন ফুট বাড়ানো হচ্ছে। ক্লাবের সদস্য অনিল সাউ বলেন, “আমরা জমির মালিকদের এক জনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ওটা সামান্য নির্মাণ। তাই লিখিত অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি।” তবে যে জমিমালিকের মৌখিক অনুমতি তাঁরা নিয়েছেন, তাঁর নাম বলতে পারেননি অনিলবাবু। |
এই নির্মাণ নিয়েই নালিশ।—নিজস্ব চিত্র। |
জমির মালিকদের অন্যতম স্নেহাশিস তিওয়ারি ও আশিস তেওয়ারি অবশ্য সাফ বলেন, “আমাদের কাছ থেকে কেউ কোনও রকম অনুমতি নেয়নি। আমরা পুরসভার কাছে এই অবৈধ নির্মাণ রুখতে আবেদন জানিয়েছি। পুরসভা কাজ বন্ধ করতে নির্দেশও দিয়েছে। কিন্তু তা মানা হয়নি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, তাঁরা কোর্টে গেলে বর্ধমানের এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সোমবার ওই নির্মাণ ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। বর্ধমান থানার আইসি এবং বর্ধমান ১ বিএলএলআরও-কে ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে। ক্লাব সদস্যদের অবশ্য দাবি, আদালতের নির্দেশের কথা তাঁদের জানা নেই।
জমির মালিকদের আরও অভিযোগ, তাঁরা এ ব্যাপারে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে এলাকায় এই অবৈধ নির্মাণ চলছে, সেই ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব সভাপতি রেখা তিওয়ারি জমির মালিকদের আত্মীয়া। তাঁর অভিযোগ, “এই নির্মাণের ব্যাপারে আমি প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু নির্মাণকারীদের একাংশ তৃণমূলের ছত্রছায়ায় রয়েছে। তাই আমাকে দলের কোনও নেতা সাহায্য করছেন না। উল্টে, ওই নির্মাণকারীরা প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।” জমির মালিক সুবোধ তিওয়ারি, শ্যামল তিওয়ারিদের দাবি, “গায়ের জোরে অবৈধ নির্মাণ চলছে। বাধা দিতে গেলে আমাদের উপরে চড়াও হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” জমিমালিকেরা জানান, তাঁরা এ ব্যাপারে শহর যুব তৃণমূল সভাপতি খোকন দাসের কাছে গিয়েছিলেন। খোকনবাবু অবৈধ নির্মাণ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও কাজ হয়নি।
ক্লাবের সদস্যেরা যদিও হুমকি দেওয়া বা চড়াও হওয়ার কথা মানেননি। তৃণমূল নেতা খোকনবাবু বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে না দেখে কিছু বলতে পারব না।” বর্ধমানের আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। আদালতে নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট পেশ করব।” পুরসভার চেয়ারম্যান আইনুল হকেরও বক্তব্য, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |