ফের সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির পরে তিন মাস কেটে গেলেও টাকা না মেলার অভিযোগ উঠল কালনায়। মেদগাছির পরে এ বার অভিযুক্ত শাঁখাটি কৃষি উন্নয়ন সমিতি। মঙ্গলবার বিকেলে আট জন চাষির একটি দল কালনা ১ বিডিও এবং মহকুমাশাসকের কাছে সমস্যার কথা লিখিত আকারে জানিয়েছেন।
আটঘোরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের শাঁখাটি গ্রামের ওই চাষিদের অভিযোগ, স্থানীয় সমবায় বস্তা পিছু সাড়ে সাতশো টাকা দরে ধান কেনা শুরু করেছিল গত ৪ জানুয়ারি থেকে। গ্রামের ১২০ জন মোট ৩৭৫৪ বস্তা ধান বিক্রি করেন সেখানে। যার মোট মূল্য প্রায় আঠাশ লক্ষ টাকা। সমবায়ের তরফে এই ধান বিক্রি করা হয় কাছাকাছি একটি চালকলে। তারা ধান থেকে চাল তৈরি করে সরকারি সংস্থার গুদামে জমা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও ধানের দাম মেলেনি। চাষিদের দাবি, চালকল কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলে তাঁরা সমবায়কে নিজেদের তহবিল থেকে চার লক্ষ টাকা দেন। তা থেকে ১১ জন চাষির বকেয়া মেটানো হয়। |
মহকুমাশাসককে অভিযোগ জানিয়ে ফিরছেন চাষিরা। —নিজস্ব চিত্র। |
শাঁখাটি সমবায় সমিতির ম্যানেজার মহম্মদ আলি মল্লিকের বক্তব্য, “সরকারি সংস্থা নিয়ম অনুযায়ী টাকা না মেটানোয় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে টাকা চেয়ে আবেদন করেছি।” চাষিরা জানান, বার্ষিক সাত শতাংশ সুদে অনেকেই সমবায়ের কাছে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন। টাকা পেয়ে গেলে তা শোধ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। শাঁখাটি গ্রামের সাহিদ রহমান শেখ, ফিরোজ রহমান শেখদের বক্তব্য, “দিন কয়েক পরেই নতুন আর্থিক বর্ষ শুরু হবে। ফলে, সমবায় সমিতি ঋণের উপরে আরও সুদ চাপাবে। ধান বিক্রির টাকা পেয়ে গেলে এই ঋণের বোঝা বইতে হতো না।”
কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের মেদগাছি সমবায়ে ধান বিক্রি করে টাকা না মেলার অভিযোগ তুলে গত ২২ মার্চ চারটি গ্রামের চাষিরা ব্লক অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদেরও অভিযোগ ছিল, তিন মাস ধরে টাকা আটকে থাকায় নতুন করে চাষ করতে ও সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে দু’সপ্তাহের মধ্যে টাকা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাতিলপাড়া সমবায় সমিতিতেও ধান বিক্রি করে চাষিদের টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে খবর রয়েছে।
এ দিন বিকেলে কালনার ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, “মেদগাছি সমবায়ে ধান বিক্রি করা চাষিদের পাওনা শীঘ্রই মেটানো হবে। শাঁখাটি সমবায়ের ঘটনায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা দেখা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, পাতিলপাড়া সমবায় মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ধান কিনেছে। দোলের জন্য শ্রমিক পেতে সমস্যা হওয়ায় সরকারি গুদামে চাল পৌঁছতে সময় লাগছে। তা পৌঁছে গেলেই চাষিরা প্রাপ্য টাকা পেয়ে যাবেন।
|