ক’দিন আগে মেদিনীপুর শহরের এক পুকুর থেকে যে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, তা মেডিক্যাল কলেজের বলে দাবি করল সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠন। শুধু দাবি জানানোই নয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সোমবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভও হয়। সামিল হন বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো। বিক্ষোভ চলাকালীন ছাত্র-যুবদের একাংশ জোর করে কলেজে ঢুকতে গেলে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ কর্মীরা কলেজে ঢুকতে বাধা দেন। সংগঠনের নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয় ওই সংগঠনগুলোর এক প্রতিনিধি দল। |
কেন এই বিক্ষোভ? সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ বলেন, “আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, যে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, তা মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন এবং গবেষণার কাজে লাগে। ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহারের এই হাড়গোড় কে বা কারা বাইরে নিয়ে এল, বুঝতে পারছি না। শাসক দলের পক্ষ থেকে এই হাড়গোড় নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে। আমরা চাই, ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক।” দিলীপবাবুর কথায়, “আমরা জানতে পেরেছি, উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ে কিছু অক্ষর মুদ্রিত রয়েছে। এমন হাড়গোড় মেডিক্যাল কলেজেই থাকে।” একই বক্তব্য এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পন্ডার। তাঁর কথায়, “যে বস্তায় হাড়গোড় মিলল, সেটি নতুন। আর হাড়গোড়গুলো পুরনো। ওই বস্তা কী ভাবে পুকুরে এলো, কে বা কারা নিয়ে এলো, পুলিশের উচিত তা খতিয়ে দেখা। দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা।”
এ দিন মেদিনীপুর কোতয়ালি থানাতেও স্মারকলিপি জমা দেন বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। পুরো ঘটনার তদন্তের দাবি জানান। গত শুক্রবার দুপুরে শহরের মিরবাজার এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে বস্তা মেলে। ওই বস্তার মধ্যে কিছু হাড়গোড় ছিল। পুলিশ তা উদ্ধারও করে। যে এলাকায় এই পুকুরটি, তার অদূরে রয়েছে সিপিএমের কৃষকসভার জেলা কার্যালয়। কিছু দূরে সিপিএমের জেলা কার্যালয়। রাতে এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগপত্রে দীপক সরকার সহ সাত জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে। যদিও এঁদের নামে এখনও মামলা রুজু করেনি পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিত্যক্ত পুকুর থেকে হাড়গোড় উদ্ধার প্রসঙ্গে দীপকবাবুর বক্তব্য, “মিথ্যে অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, এমন আরও গল্প তৈরি করা হবে।”
তৃণমূল অবশ্য এই দাবি নস্যাত্ করেছে। দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যার বক্তব্য, “গল্প আমরা তৈরি করিনি। সিপিএমই করছে। পুলিশের উচিত, পুরো ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।” অন্য দিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যাল বলেন, “স্মারকলিপি পেয়েছি। কিছু দাবি জানানো হয়েছে। বিষয়টি দেখছি।” যে দাবি জানানো হয়েছে, সেটি কী ঠিক? অধ্যক্ষের কথায়, “দাবি করা হয়েছে, হাড়গোড় না কি মেডিক্যাল কলেজের। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাচ্ছি। যা তদন্ত বা পদক্ষেপ করার পুলিশ করবে। কলেজের কিছু করার নেই।”
|
বিষক্রিয়ায় অসুস্থ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ল দুই শিশুকন্যা এবং তাদের মা। সোমবার হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের। পুলিশ জানায়, হাওড়া থানার অন্তর্গত গোপাল মুখার্জি সেকেন্ড বাইলেনের বাসিন্দা পেশায় মার্বেল-মিস্ত্রি অশোক করের স্ত্রী সোমা এবং তাঁদের দুই শিশুকন্যা শ্যামলী (৮) ও দীপমালাকে (৬) অসুস্থ অবস্থায় এ দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের দাবি, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পুলিশের অনুমান, পরিবারে আর্থিক অনটনের জেরে কোনও অশান্তি থেকে এই ঘটনা। |