আদালত চত্বরে আইনজীবীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে উঠল এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। হাড়োয়া থানার ওই সাব ইন্সপেক্টর অরুণচন্দ্র বসুকে গ্রেফতার ও তাঁর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোমবার বসিরহাট আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। অভিযুক্ত অফিসারকে ২ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
অরুণচন্দ্রর বিরুদ্ধে বসিরহাটের এসিজেএমের কাছে এ দিনই মামলা দায়ের করেন বসিরহাট ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস। এসিজেএম মামলাটি পাঠিয়ে দেন দ্বিতীয় অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সোহন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে অরুণবাবু বলেন, “আমি কেন এক জন আইনজীবীকে হুমকি দিতে যাব? তিনি তাঁর কাজ করেছেন। আমি আমার কাজ করেছি। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদালতের নির্দেশ এখনও পৌঁছয়নি। কাগজপত্র পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
বিশ্বজিৎবাবু ওই সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন কোন পরিস্থিতিতে? পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বসিরহাটে একটি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধরা পড়ে আনছার ঘরামি ও নাসির খান। অভিযুক্তদের জেরা করার জন্য ১৬ মার্চ আদালতে আর্জি পেশ করেন অরুণবাবু। অভিযুক্তদের হয়ে মামলাটি লড়ছেন বিশ্বজিৎবাবু। অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে তাঁর সামনে জেরা করতে হবে বলে আদালতের কাছে আর্জি জানান তিনি। বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, বিচারক তা মঞ্জুরও করেন। যদিও তাঁর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিশ্বজিৎবাবুর অনুপস্থিতিতেই অভিযুক্তদের জেরা করা হয়।
২০ মার্চ মামলাটি ফের আদালতে ওঠে। এ বার অরুণবাবু অভিযুক্তদের আরও ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদন জানান। বিশ্বজিৎবাবু আগের ঘটনা বিচারককে বিস্তারিত বলেন। ওই আইনজীবীর দাবি, আদালতের নির্দেশ অমান্য করার কারণ অরুণবাবুর কাছে জানতে চান বিচারক। তার প্রেক্ষিতেআদালতে দাঁড়িয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন অরুণবাবু। আদালত চত্বরে অরুণবাবুর সঙ্গে বিশ্বজিৎবাবুর বাদানুবাদ হয়। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, “বিচারককে আমি গোটা ব্যাপারটা জানানোয় অরুণবাবু আদালত থেকে বেরিয়েই আমাকে হুমকি দেন। এই মামলায় আমাকেও কোমরে দড়ি বেঁধে গ্রেফতার করা হবে বলেন।” সোমবার সে কথা আদালতকে জানিয়ে মামলা দায়ের করেন বিশ্বজিৎবাবু।
ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবব্রত গোলদার বলেন, “আমাদের সামনেই বিশ্বজিৎবাবুকে হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আমরা অপমানিত বোধ করছি। আমাদের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত। পুলিশ সকলের রক্ষাকর্তা। তারাই যদি প্রকাশ্যে হুমকি দেয়, তা হলে সাধারণ মানুষ থানায় বিচার চাইবেন কী করে?” |