|
|
|
|
সঞ্জয় আর কষ্ট পান, চান না মমতাও, আপত্তি বিজেপি-শিবসেনার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মুন্নাভাইয়ের জন্য জনমত গড়ে তোলার একটা চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর থেকেই। সঞ্জয় দত্তকে যাতে ফের জেলে যেতে না হয়, তার জন্য একে একে অনেক রাজনৈতিক নেতাই মুখ খুলেছেন ইতিমধ্যে। সেই দলে এ বার যোগ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ফেসবুকে কলম ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, অনেক হয়েছে, আর নয়। সঞ্জয়কে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।
মমতার পাশাপাশি এই একই দাবি করেছেন, কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার রাজ ঠাকরে, একদা সমাজবাদী পার্টির অমর সিংহ ও জয়াপ্রদা। অবস্থানে লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে শরদ পওয়ারের এনসিপি ও বালাসাহেব ঠাকরেহীন শিবসেনার। ছেলের জন্য সুনীল দত্ত এক সময় দ্বারস্থ হয়েছিলেন বালাসাহেবের। শিবসেনাপ্রধান সে বার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সঞ্জয়ের পাশেই। কিন্তু সে সময় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পওয়ারকে পাশে পায়নি দত্ত পরিবার। এখন পওয়ারের দল চাইছে, ক্ষমা করা হোক সঞ্জয়কে। আর বালাসাহেব-উত্তর পর্বে উদ্ধবের শিবসেনা জানাচ্ছে আপত্তি। |
|
সঞ্জয়কে মাফ করে দেওয়া প্রসঙ্গে তাঁর বাবার প্রসঙ্গ টেনে মমতা আজ ফেসবুকে লিখেছেন, “সুনীল দত্তের সঙ্গে একসঙ্গে সংসদে রাজনীতি করেছি। আজ সুনীল দত্ত থাকলে তিনিও চেষ্টা করতেন, সঞ্জয়কে যাতে আর কষ্ট পেতে না হয়। আমার মনও তেমনটাই বলছে। নিজের ভুলের জন্য যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছেন সঞ্জয়।” মমতা চান, সঞ্জয় যেন বাকি জীবনটা শান্তিপূর্ণ ভাবে কাটাতে পারেন। তিনি লিখেছেন, “নাগরিক সমাজ এবং চলচ্চিত্র জগতের বহু প্রতিনিধিই আমাকে অনুরোধ জানিয়েছেন, সঞ্জয়কে যাতে আর কষ্ট না করতে হয়, তা দেখতে। কিন্তু এটা তো আমার হাতে নয়। সঞ্জয় বহু সমস্যার সঙ্গে লড়ে আবার গুছিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। আমি শুধু এটাই চাই, আর যেন সমস্যায় না পড়তে হয় তাঁকে।” সকলে একজোট হয়ে সঞ্জয়ের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বানও জানিয়েছেন মমতা।
কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহও আজ সঞ্জয়ের সমর্থনে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, সঞ্জয় ‘দারুণ মানুষ’, একটা বোকামো করে ফেলেছিলেন মাত্র। সে সময় ওঁর বয়স ছিল ৩৪ বছর, ‘বাচ্চা ছেলে’। ভুল করেছিলেন এবং শাস্তিও পেয়েছেন যথেষ্ট। তবে দিগ্বিজয়ের মন্তব্য থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে চেয়েছে কংগ্রেস। দলীয় মুখপাত্র রশিদ অলভি এ-ও বলেন, “আইনের কাছে কেউ বড় বা ছোট নন। চাইলে কেউ রাজ্যপালের কাছে আর্জি জমা দিতে পারেন। দল তাতে মাথা ঘামাবে না।”
সমাজবাদী পার্টির বহিষ্কৃত নেতা অমর সিংহ এবং সাংসদ জয়াপ্রদা জানান, তাঁরা কাল মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়ণের সঙ্গে দেখা করে সঞ্জয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার আর্জি জানাবেন। এনসিপি-ও আজ বলেছে, সঞ্জয় যদি ক্ষমাভিক্ষার আবেদন জানান, সহমর্মিতার সঙ্গে তা যেন বিচার করে দেখা হয়।
কিন্তু শিবসেনার অবস্থানে অবাক হয়েছেন অনেকেই। ২০ বছর আগে শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরের সাহায্যেই জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন সঞ্জয়। শিবসেনা নেত্রী নীলম গোরহে আজ মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বলেন, “সঞ্জয়কে ক্ষমা করে দেওয়া হলে সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাবে।” কিন্তু বালাসাহেবের ভাইপো ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে সঞ্জয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আসল দোষীরা সব দেশের বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর সঞ্জয়কে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।” শিবসেনার জোটসঙ্গী বিজেপি সঞ্জয়কে ক্ষমা করার বিরোধী। এনডিএ-র আর এক শরিক জনতা পার্টির নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী তো সঞ্জয়কে ক্ষমা করা হলে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিই দিয়ে রেখেছে।
রাজনীতির রং বদলায়। বদলায় অবস্থানও। সঞ্জয় দত্তের ভবিষ্যৎ নিয়েও তাই খেলায় নেমেছেন রাজনীতিকরা। |
পুরনো খবর: জেলের পথে মুন্নাভাই |
|
|
|
|
|