বারুইপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সদর হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সংশয় তৈরি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বারুইপুরের টংতলায় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “এই বারুইপুরেই জেলা সদর তৈরি হওয়ার পরিকল্পনা তৈরি হয়েছিল।
বিগত সরকার জমি অধিগ্রহণ করেছিল। কিন্তু একটা ভৌগোলিক সমস্যা রয়েছে।” ক্যানিং, কুলতলি, ডায়মন্ড হারবারের লোক কী করে বারুইপুর আসবে, সে বিষয়ে একটা সমস্যা থেকেই যাচ্ছে, জানিয়ে মমতা বলেন, “এখানে সাবডিভিশন হতে পারে, ব্লক অফিস হতে পারে।” তিনি জানান, বিধানসভার অধ্যক্ষ তথা স্থানীয় বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি বলেছেন, বিষয়টা নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা বলতে। তিনি বলেন, “এখানকার উন্নয়নের কাজ কেএমডিএ-ই করছে।” স্থানীয় মানুষদের তিনি আশ্বাস দেন, “এখানে অনেক প্রকল্প হবে, এখানকার লোকেরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে অনেক কাজ পাবেন।” |
বিগত বামফ্রন্ট সরকার বারুইপুরে জেলা সদর তৈরি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রশাসনিক এবং পুলিশ হেড কোয়ার্টার হবে বলে বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণও হয়েছিল। কিন্তু মমতা আজ সে বিষয়ে সংশয় তৈরি করলেন। আদৌ সেখানে জেলা সদর তৈরি হবে কি না সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও প্রতিশ্রুতি দিলেন না। বিরোধী সিপিএম নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জেলা সদর আলিপুর থেকে বারুইপুর নিয়ে আসার পরিকল্পনার মূল কাণ্ডারী ছিলেন যাদবপুরের তৎকালীন সাংসদ সুজন চক্রবর্তী। সুজনবাবু বলেন, “আলিপুর বস্তুত কলকাতার মধ্যে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত জায়গা থেকে সেখানে যাওয়ার অসুবিধেয় ভোগেন বহু মানুষ। তাই আমরা জেলা সদর বারুইপুরে আনতে চেয়েছিলাম।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভিত্তিতে বারুইপুরে জেলা সদর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সংশয় প্রকাশ করে কার্যত জেলা সদর তৈরির বিষয়টি বানচাল হয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে গেলেন।”
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেন। তিনি জানান, নোনাডাঙা, সোনারপুর ও প্রগতি ময়দান, এই তিনটি জায়গায় অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র তৈরি করা হবে। বাসন্তী ও কুলতলিতে ‘ফ্লাড শেলটার’-এর উদ্বোধন করেন তিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে বারুইপুর ফ্লাইওভার চালু হয়ে যাবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে কেষ্টপুর-ঘুসিঘাটা খালের উপর নবনির্মিত ভাঙড় ব্রিজের উদ্বোধন করলেন। এ দিন ওই ব্রিজ গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ভাঙড়ে সেই সময় উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পরিবেশ মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার প্রমুখ। প্রায় তিন বছর ধরে ছশো ফুট লম্বা এই ব্রিজটি করতে খরচ হয়েছে ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। |