একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বারাসত থানার গঙ্গাপুর এলাকা। ঘটনার পর দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দিল ক্ষিপ্ত জনতা। টেলিফোনের খুঁটি রাস্তায় ফেলে বারাসতের রাজীবপুর-সন্তোষপুর সড়ক দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখেন চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে দমকল বাহিনী এবং পুলিশ এলে প্রথমে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে বারাসতের এসডিপিও সুবীর চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বারাসত, আমডাঙা, অশোকনগর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি আয়ত্তে না আসায় নামানো হয় র্যাফ।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “পরিস্থিতি সামলাতে র্যাফ নামানো হয়েছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে গঙ্গাপুর-ঘোষপাড়ার বাসিন্দা কিশোর ঘোষ মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী মৌসুমীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ওই সময় উল্টোদিক থেকে আসা মাটিভর্তি একটি গাড়ি রাস্তায় বাঁক নিয়ে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। বাবা-মেয়ে দুজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। |
এই ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। ওই সড়ক দিয়ে মাটি বোঝাই গাড়ি চলাচলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল সাধারণ মানুষের। এ দিনও সেই গাড়ি থেকেই দুর্ঘটনা ঘটায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। গাড়িটি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। একটু দূরেই খালের মধ্যে থাকা একটি মাটি কাটার যন্ত্রেও আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। এলাকার এক বাসিন্দা খাল থেকে মাটি কেটে ‘বেআইনি’ ভাবে তা বিক্রি করছিলেন, এই অভিযোগ তুলে জনতা তার বাড়ির সামনে গিয়েও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এবং তার বাড়ির মধ্যেও ঢোকার চেষ্টা করে। দত্তপুকুর ফাঁড়ির পুলিশ এবং দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে ঢুকতে চেষ্টা করলে জনতা তাদের বাধা দেয়। পরে এসডিপিও বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে যান। আনা হয় র্যাফ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাটি কাটার ফলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর তার প্রভাব পড়ছে। সড়ক দিয়ে মাটি বোঝাই গাড়িগুলি বেপরোয়া ভাবে যাওয়ার ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গাড়ি থেকে প্রতিনিয়ত মাটি রাস্তায় পড়ার ফলে যাতায়াতেও দেখা দিচ্ছে সমস্যা।
তাঁদের দাবি, ওই রাস্তা দিয়ে অবিলম্বে মাটিবোঝাই গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের দাবি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় রয়েছে পুলিশ পিকেট। |