ঝাড়গ্রাম-সহ গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু নানা কারণে তা এখনও বাস্তবায়িত করা যায়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যটনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগের দিনই ঝাড়গ্রামে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব বিক্রম সেন। তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। বৈঠকে ছিলেন জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ।
এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “কয়েকটি প্রকল্পের জন্য সরকার অর্থ মঞ্জুর করেছে। সেই টাকায় যাতে দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ এবং কোথায় কোথায় নতুন করে পর্যটন কেন্দ্র করা যায় সে বিষয়ে প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। আমরা সেই কাজ শুরু করে দিয়েছি।”
জামবনির চিল্কিগড়ের কণকদুর্গা মন্দির, কাঁকড়াঝোর বিটে ট্রেকিং রুট তৈরি ছাড়াও ইকো ট্যুরিজম, বেলপাহাড়ির কেটকিঝোরাতে ইকো ট্যুরিজমের পরিকাঠামো তৈরি, গাড়রাসিনি, ঘাঘরা ও রত্নেশ্বর মন্দির ঘিরে পর্যটন কেন্দ্রের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা, হাতিবাড়ি ও ঝাড়গ্রামে কটেজ তৈরির জন্য আগেই ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। হাতিবাড়ি ও ঝাড়গ্রামে কটেজ তৈরি প্রায় শেষ। বাকি রয়েছে আসবাবপত্র কেনা। প্রশাসন জানিয়েছে, শীঘ্রই আসবাবপত্র কিনে ওই কটেজগুলির উদ্বোধন করে দেওয়া হবে। বাকি কাজও দ্রুত শুরু করে দেওয়া হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক জায়গা রয়েছে যা ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে। সে জন্য কী ভাবছে প্রশাসন? অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, ওই সমস্ত জায়গাগুলির জন্যও যাতে সরকার অর্থ বরাদ্দ করে সে জন্য প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দাঁতনের মোগলমারি, শরশঙ্কা, গোপীবল্লভপুরের ঝিল্লি পাখিরালয়, পিংলার নয়া (পটশিল্পীদের গ্রাম), গোয়ালতোড়ের রূপার ঘাঘরা, কর্ণগড় (ইতিহাসখ্যাত রানি শিরোমণির রাজপ্রাসাদ ছিল ওখানেই) প্রভৃতি এলাকার উন্নয়নের জন্য এ বার প্রস্তাব পাঠাচ্ছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “অর্থ মঞ্জুর হলেই ওই সব জায়গার উন্নয়ন ঘটানো হবে। যাতে তা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।”
এর বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির সৌন্দর্যায়ন, কটেজ তৈরির পরিকল্পনা তো রয়েছেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সোমবার (মুখ্যমন্ত্রী বিনপুরের প্রশাসনিক সভায় যোগ দেওয়ার আগের দিনই) পর্যটন দফতরের কর্তারা ঝাড়গ্রামে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখার পর প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেখানেই পর্যটন দফতর জানিয়ে দেয় যে, এবার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে জেলাকে আরও অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। সেই লক্ষ্যে দ্রুত পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে হবে এবং নতুন নতুন প্রস্তাবও পাঠাতে হবে। অতিরিক্ত জেলাশসাক জানান, বন দফতরকেও উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। যাতে সাধারণ প্রশাসন ও বন দফতর সমন্বয় রেখে দ্রুত পরিকল্পনা রূপায়ণ করে ও নতুন প্রস্তাবও পাঠাতে সক্ষম হয়। |