শ্রীলঙ্কায় তামিলদের উপর অত্যাচার নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের খসড়া প্রস্তাবের বয়ান বদলে গেল শেষ মুহূর্তে। কাল এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নতুন প্রস্তাবে শ্রীলঙ্কার সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর কমিয়ে আনা হল অনেকটাই।
শ্রীলঙ্কায় তামিলদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আগের প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক তদন্তের কথা বলা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে তৈরি নতুন খসড়ায় নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত রাতারাতি বদলে গিয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকারের নিজেদের তদন্তের দাবিতে। আগের মতোই নতুন প্রস্তাবে নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য তদন্তের উল্লেখ রয়েছে। বাদ গিয়েছে শুধু ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটাই। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা শ্রীলঙ্কার যে কোনও জায়গায় গিয়ে অবস্থা দেখে আসতে পারেন, এ নিয়ে একটা গোটা পরিচ্ছেদ ছিল আগের প্রস্তাবে। গোটাটাই ছেঁটে ফেলা হয়েছে নতুন খসড়ায়।
অভিযোগ, এই দুই বড় পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রায় পুরো প্রস্তাবেই ভাষার ব্যবহার বদলে গিয়েছে চোখে পড়ার মতো। বহু জায়গাতেই কড়া শব্দবন্ধ তুলে নিয়ে বসানো হয়েছে নরম শব্দ। চলতি বছরেরই সেপ্টেম্বরে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। আগে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে শ্রীলঙ্কার ব্যর্থতার কথা বললেও, নতুন প্রস্তাবে উল্টে জনতার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। স্বীকৃতি জানানো হয়েছে পরিকাঠামোর উন্নতি, ঘরছাড়াদের অধিকাংশের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাকেও।
দেশের মানুষদের অধিকার রক্ষার দায় শ্রীলঙ্কার সরকারেরই রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের আগেকার প্রস্তাবে স্পষ্ট লেখা ছিল এমনটাই। ‘শ্রীলঙ্কার সরকারের দায়িত্ব’ এখন বদলে হয়েছে, ‘যে কোনও রাষ্ট্রেরই’ দায়িত্ব। একই সঙ্গে হাই কমিশনারের রিপোর্টে যে সমস্ত সুপারিশ করা হয়েছিল, তার বাস্তবায়নের আর্জি ছিল প্রথম প্রস্তাবে। পরে তা বদলে লেখা হয়েছে, সুপারিশের বাস্তবায়নে শ্রীলঙ্কাকে উৎসাহ দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এত কিছুর পরও অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব মানতে নারাজ শ্রীলঙ্কা। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পক্ষপাতদুষ্ট এই প্রস্তাব মানার কোনও প্রশ্নই নেই। |