প্রবন্ধ ৩...
শিল্পে যাতে বিনিয়োগ বাড়ে
ক দিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের বৃদ্ধির হার কমছে, অন্য দিকে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিরও দ্রুত উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, এমন একটি পরিস্থিতিতে বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী পালনিয়াপ্পন চিদম্বরম। ভারতীয় অর্থনীতির স্বাস্থ্যোদ্ধারের কাজে তাঁর বাজেটটি সহায়ক হবে, কারণ বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহ দিয়েছেন তিনি।
ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার একটা বড় কারণ হল পরিকাঠামো এবং উৎপাদন শিল্পের গতিভঙ্গ। তাই এই বাজেটে পরিকাঠামো ক্ষেত্রকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেখে ভাল লাগছে। পরিকাঠামোয় বিনিয়োগের অর্থ সংস্থান, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের প্রসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছেন অর্থমন্ত্রী। ঋণপত্রের সাহায্যে পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য অর্থ সংস্থানের সুযোগ বাড়ানো হয়েছে, পরিকাঠামোয় বিনিয়োগে কর ছাড়ের প্রসার ঘটেছে এবং গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (আর আই ডি এফ) মূলধনের পরিমাণ বেড়েছে বিভিন্ন ভাবেই অর্থমন্ত্রী পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতে সড়ক নির্মাণ, বিভিন্ন বন্দর এবং জলপথ নির্মাণ ইত্যাদি উদ্যোগগুলি ভারতে পরিবহণ ক্ষেত্রের প্রসারে বিশেষ সহায়ক হবে, অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি কুশলতাও তার ফলে বাড়বে। দিল্লি-মুম্বই শিল্প করিডর ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ সংযোগসাধক রাস্তাগুলি যত দ্রুত সম্ভব চালু করা প্রয়োজন। বাজেটে সেই কথাই বলা হয়েছে। কয়লার জোগানের ঘাটতি এবং বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলার দিকেও এই বাজেটে নজর দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বড় প্রকল্পগুলি রূপায়িত হলে অদূর ভবিষ্যতে ইস্পাত, সিমেন্ট ইত্যাদির চাহিদাও বাড়বে।
‘ম্যানুফ্যাকচারিং’ বা উৎপাদন শিল্পে যে সব সংস্থা কারখানা ও যন্ত্রপাতিতে ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি বিনিয়োগ করবে, আগামী দু’বছর তাদের ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ-অনুদান দেওয়া হবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। যে সব প্রকল্প রূপায়ণের কাজ আটকে আছে, সেগুলি চালু করার পক্ষে এই সুযোগ দারুণ কাজ করতে পারে। অর্থমন্ত্রী ভারতের শিল্পক্ষেত্রে বিদেশি পুঁজির গুরুত্বের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ, বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের ক্ষেত্রে নিয়মকানুন সরল করা হবে। তাঁর এই সিদ্ধান্তে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহিত হতে পারেন।
এ বারের বাজেটে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পও গুরুত্ব পেয়েছে। ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই শিল্পগুলি অতি জরুরি, কারণ এখান থেকেই বহু বাণিজ্যিক উদ্যোগের সূচনা হয়, এ সব ক্ষেত্রে প্রচুর কর্মসংস্থানও হয়। যে সংস্থাগুলি এই ক্ষেত্র থেকে সফল ভাবে পরের ধাপে পৌঁছতে পারবে, অর্থমন্ত্রী তাদের আগামী তিন বছরের জন্য কিছু কর-বহির্ভূত ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে অর্থ সংস্থানের সুযোগ বাড়লে এবং শিল্পমুখী গবেষণায় আরও বিনিয়োগ করা হলে এই ধরনের শিল্পের বৃদ্ধির হার ত্বরান্বিত হতে পারে।
পাশাপাশি দক্ষ কর্মী তৈরিতেও জোর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ন্যাশনাল রুরাল অ্যান্ড আরবান লাইভলিহুড মিশন-এর অধীনে দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগও হবে। তার জন্য আরও অর্থের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আশা করব, এর ফলে ভবিষ্যতে ভারতে দক্ষ কর্মীর জোগান যথেষ্ট বাড়বে।

সি আই আই-এর ডিরেক্টর জেনারেল


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.