প্রেসিডেন্সি: প্রাক্তনীর দান ২৫ লক্ষ
স্ট্রিং থিওরি’ নিয়ে তাঁর গবেষণা আগেই সমৃদ্ধ করেছে বিজ্ঞানজগৎকে। তাঁর নোবেলের তিন গুণ অর্থমূল্যের ‘ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স’ পুরস্কার জয়ে গর্বিত হয়েছে বাঙালি। সেই তিনি, নিজের কলেজের উন্নয়নেও নজিরবিহীন আর্থিক অবদান রাখলেন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের উন্নয়ন তহবিলে ব্যক্তিগত ভাবে ২৫ লক্ষ টাকা দান করলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী তথা প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মেন্টর’ গ্রুপের অন্যতম সদস্য অশোক সেন।
রবিবার তাঁর এই অবদানের কথা বলতে গিয়ে উপাচার্য থেকে প্রাক্তনী সংসদ, সকলেই যখন অভিভূত, তখন অশোকবাবুর প্রতিক্রিয়া কিন্তু জানা গেল না। তিনি গিয়েছেন সুদূর জেনিভায়, বহুপ্রতীক্ষিত ‘ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স’ পুরস্কারটি নিতে। তাঁর ওই ৩০ লক্ষ ডলার অর্থমূল্যের পুরস্কার নেওয়ার কথা আগামী ২০ মার্চ।
পদ্মভূষণ-প্রাপ্ত বিজ্ঞানী অশোকবাবু বর্তমানে ইলাহাবাদের হরিশ্চন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক। ১৯৭৫ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হয়ে আইআইটি কানপুরে যান স্নাতকোত্তরের জন্য। সেখান থেকে গবেষণার জন্য আমেরিকার স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি। ‘ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স’ পুরস্কার ঘোষণার সময়ে অশোকবাবুর কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেছিলেন পুরস্কারদাতা ইউরি মিলনার।
অশোক সেন
করবেন না-ই বা কেন? অশোকবাবু ছাড়া ওই পুরস্কার গোটা বিশ্বের আর মাত্র আট জন বিজ্ঞানী পেয়েছেন। তাঁরা সকলেই পশ্চিমী দুনিয়ার লোক।
এমন অভূতপূর্ব নজির যিনি রেখেছেন, তাঁর অনুদানকেও অভূতপূর্ব বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংসদের কর্মসচিব বিভাস চৌধুরী। বিভাসবাবুর কথায়, “প্রেসিডেন্সির ইতিহাসে ব্যক্তিগত ভাবে এত বড় দান হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হিন্দু কলেজ যখন তৈরি হচ্ছিল, সেই সময়ে বড় দান হয়েছিল। কিন্তু তার পর প্রেসিডেন্সি কলেজ থাকাকালীন এত বড় ব্যক্তিগত দান কেউ করেননি। প্রাক্তনী হিসেবে আমাদের কাছে এটা অভূতপূর্ব ঘটনা। তবে পাশাপাশি আশা করব, এই দানের টাকা যথার্থ ভাবে খরচ হবে।”
প্রেসিডেন্সির কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরণের পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য উপাচার্য মালবিকা সরকার ‘উপাচার্য তহবিল’ খোলেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রাক্তনীদের পাশাপাশি ইচ্ছুক ব্যক্তি এবং সংস্থার কাছে আবেদন করা হয় ওই তহবিলে দানের জন্য। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসে উপাচার্য এই তহবিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘গিভিং টু প্রেসিডেন্সি’ বলে একটি বিভাগ চালু করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি ভাবে প্রাক্তনীদের কাছে চিঠি পাঠানোর আগেই অশোকবাবু পাঠানো অর্থ এসে যায়। উপাচার্য মালবিকা সরকার বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে প্রেসিডেন্সি কলেজের অঙ্কের এক প্রাক্তনী ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে তহবিলে প্রথম দানটি করেন। কিন্তু তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। দ্বিতীয় জনই হলেন অধ্যাপক অশোক সেন।”
প্রাক্তনী সংসদের কর্মসচিব বিভাসবাবু জানান, প্রেসিডেন্সি কলেজ থাকাকালীন আর এক প্রাক্তনী, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বিমল জালান বড় অঙ্কের টাকা দান করেছিলেন। কিন্তু তিনি নিজের সাংসদ তহবিল থেকে টাকাটা দিয়েছিলেন। সেখানে অশোক সেনের মতো বিশ্বমানের শিক্ষক-গবেষকের ব্যক্তিগত ভাবে এত বড় অঙ্কের টাকা দান অন্য প্রাক্তনীদেরও অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি মনে করেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.