নানা রকম ২...
যেন নতুন তাসের দেশ
একঘেয়েমি নিয়মানুবর্তিতা ও রাজ আচারে ক্লান্ত রাজপুত্র নিয়ম ভাঙার নেশায় পাড়ি দেয় অজানা রোমাঞ্চকর সন্ধানে। সাক্ষী হয় নিয়মানুগ হিসেবী ও প্রচলিত ভাবধারায় আস্থাভাজক সওদাগরপুত্র। এই বিসদৃশ ভাবধারী অভিযাত্রীদ্বয় জাহাজডুবির পর এসে পৌঁছয় তাসের দেশ-এ। রাজপুত্র তাস-অধিবাসীদের অতি নিয়মানুবর্তিতা ও প্রাণহীনতা অনুভব করে এবং তার প্রাণোচ্ছল ও জীবনীশক্তিময় ব্যক্তিত্বের ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে তাসেদের আত্মা জাগরিত করে তোলে। তাসেদের এই অভূতপূর্ব পরিবর্তনে ধীরে ধীরে মেতে ওঠে সকলেই। পরিশেষে তাসের রাজাও। ফলে নিয়ম নয়, প্রতিষ্ঠা পায় ইচ্ছেশক্তি। অনিশ ঘোষের নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথের ‘তাসের দেশ’কে একটি আদ্যোপান্ত মঞ্চনাটকরূপে উপস্থাপন করল নাট্যদল শোহন। প্রায় দু’শো বছরের নাট্য ইতিহাসে রবীন্দ্রনাটকের বহু সফল প্রযোজনার ‘তাসের দেশ’-এর মঞ্চনাটক কখনও সে রকম ভাবে বিশেষ ভাবে নজরে পড়েনি। ১৯৩৩-এ নাটকটির পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রকাশ পাওয়া থেকে আজ পর্যন্ত ‘তাসের দেশ’ মূলত নৃত্যনাট্য হিসেবেই প্রযোজিত হয়ে এসেছে। ‘তাসের দেশ’ কবি রচিত সেই সঙ্গীত নৃত্য মুখরিত নাটকের কাব্যগুণ অটুট রেখেও এক সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করার জন্য প্রশংসা পাবেন অনীশ। সমসাময়িক প্রাসঙ্গিকতাকে মাথায় রেখে নাট্যকার উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় মূল নাটকের নির্যাসকে পুরোপুরি তুলে ধরতে পেরেছেন। মঞ্চসজ্জায় হিরণ মিত্র অভিনবত্ব দেখিয়েছেন। আবহসৃজনের মধ্যে গৌতম ঘোষ ধন্যবাদ পাবেন। এ নাটকে দলগত অভিনয় বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। রাজার চরিত্রে পার্থ গুপ্ত ও দহলার চরিত্রে অনিশ ঘোষের অভিনয় অনবদ্য। প্রতীক দত্তের রাজপুত্র, তনিমা টাটের রানি, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের গোলাম বা কনিণীকাদের টেক্কানী ও অনুসূয়া মুখোপাধ্যায়ের ইস্কাবনী উল্লেখযোগ্য অভিনয়।

সব শেষে জেগেছে অন্তরে
সম্প্রতি আইসিসিআরে অনুষ্ঠিত হল রবীন্দ্রনাথের গান ও পাঠের অনুষ্ঠান। সঙ্গে নৃত্য। শিল্পী ছিলেন নন্দিনী সেনগুপ্ত। এ ছাড়াও ছিল গুণিজন সংবর্ধনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এ দিন শিল্পীর একটি গানের অ্যালবামও প্রকাশিত হয় ‘অন্তরে জাগিছো অন্তর্যামী’। পরে নিজের গাওয়া দশটি গানের সঙ্গেই কত্থক, ওড়িশি, মণিপুরি ও ভরতনাট্যম নৃত্য শৈলীতে সমৃদ্ধ করলেন তিনি। সংযোজনায় ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র।

শোনা গেল কথামানবীর ভাষ্য
সম্প্রতি বিড়লা সভাঘরে ‘সমবেত’র অনুষ্ঠানে বাচিক শিল্পী রোকেয়া রায় এবং সাহিত্যিক কৃষ্ণা বসুর দৃপ্ত কণ্ঠে ‘কথামানবীর ভাষ্য’ ও ‘সামান্য চিঠি’ কবিতা দু’টি হয়ে ওঠে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পরবর্তী পর্যায়ে রনি শম্ভিক ঘোষ ও মিতুল সেনগুপ্তের পরিচালনায় ‘হোয়াইট’ ছিল একটি নিখুঁত নৃত্যানুষ্ঠান, যেখানে কত্থক, ওয়েস্টার্ন ক্ল্যাসিকাল ও কনটেম্পোরারি এই ত্রিধারার সঠিক মেলবন্ধন ঘটে। মনের আবেগ, অনুভূতি, লোভ, দুঃখ, আনন্দ এই পর্যায়গুলি সমষ্টিগত রূপে প্রকাশিত হয় নৃত্যাংশটির মাধ্যমে। রনি ও মিতুলের ক্ষিপ্র ভঙ্গিমা, সুন্দর পদকর্ম ও পরিমিতিবোধ ছিল তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। এ ছাড়া প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংমিশ্রণে তৈরি যন্ত্রসঙ্গীতের প্রয়োগ ছিল যথাযথ। এই ভাবনার প্রতিফলন দেখা গেল দর্শকদের ভাল লাগার স্বতঃস্ফূর্ত অভিনন্দনে। সঞ্চালনায় ছিলেন রেশমি চট্টোপাধ্যায়।

এল ফাগুন
জিডি বিড়লা সভাঘরে সম্প্রতি ইরাবতী বসু শোনালেন বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত। মূলত বসন্তবন্দনার পরিপ্রেক্ষিতেই বেশ কিছু গান নির্বাচন করা হয়েছিল। তবে রবীন্দ্র-যুগের বৈঠকী গানের চলনে দু’টি গানও শোনালেন। এ দিন তিনি বেশ কয়েকটি গানে শ্রোতাদের প্রশংসা অর্জন করে নেন। তাঁর গাওয়া কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘বধূ তোমায় করব রাজা’, ‘বেলা বয়ে যায়’, ‘বসন্ত আজ ধরার চিত্ত’ প্রভৃতি। কণ্ঠমাধুর্যে প্রতিটি গানেই পেয়েছে অন্যমাত্রা। সহযোগী যন্ত্রশিল্পীরাও অনুষ্ঠানের শেষে শ্রোতাদের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছেন।

রঙে রঙে বসন্ত
সম্প্রতি শিশির মঞ্চে ‘ফাগুন হাওয়া’ উপস্থাপন করল ‘রঙে রঙে বসন্ত রঙিন’। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বসুন্ধরা শিল্পী গোষ্ঠী সম্মেলক গান পরিবেশন করে। পরে একক গানে ছিলেন দীপঙ্কর পাল ও সুছন্দা ঘোষ। এ দিন ‘তিনকন্যা’র সরমা সেন, কুমকুম বন্দ্যোপাধ্যায় ও মধুমিতা বসুঠাকুর ‘ফাগুনের সাথে’ শীর্ষক এক সুন্দর সঙ্গীত আলেখ্য উপস্থাপন করলেন। যা ভূয়সী প্রশংসিতও হয়েছে। নৃত্যে ছিলেন দেবজিৎ মুখোপাধ্যায় ও সহশিল্পীরা। পরে অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, কালিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, কণিকা চক্রবর্তী, বেলা সাধুখাঁ প্রমুখ শিল্পী গান শোনালেন। আবৃত্তিতে ছিলেন মৌ গুহ ও উষসী সেনগুপ্ত। যন্ত্রসঙ্গীতে ছিলেন তড়িৎ আচার্য, সুরজিৎ চক্রবর্তী ও বিবেক ঘোষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.