|
|
|
|
আচমকা কারখানা বন্ধের নোটিস, শ্রমিকদের বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
জানুয়ারি মাসে দেওয়া হয়েছিল কর্মীদের উৎসাহ ভাতা। দু’মাসের মধ্যেই লোকসানের কারণ দেখিয়ে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝোলালেন পাঁশকুড়ার একমাত্র কারখানা অ্যাসোশিয়েটেড পিগমেন্ট লিমিটেডের (এপিএল) মালিকপক্ষ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এই কারখানায় ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত সীসা ও রাসায়নিক রঙ তৈরির উপাদান উৎপাদন হয়। সোমবার বিকেল পর্যন্ত কাজ করার পর শ্রমিকেরা বাড়ি চলে যান। গভীর রাতে কারখানায় এসে অনির্দিষ্ট কালের জন্য উৎপাদন বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে চলে যান কারখানা কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকালে কাজে এসে কর্মীরা দেখেন বন্ধ গেটে ঝুলছে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ১৪ বছরের পুরনো এই কারখানার প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন। আচমকা কাজ হারিয়ে মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। মঙ্গলবার সকালে তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের তরফে কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে, কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ এ দিন কারখানায় আসেননি। কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জীবনন্দন সহায় ও প্রজেক্ট ম্যানেজার পুষ্পেন্দু দাসের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। |
|
কারখানার সামনে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র। |
উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে গত পাঁচ-ছ’মাস ধরে লোকসান হচ্ছিল যুক্তিতে সাসপেনসন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝোলানো হয়েছে কারখানায়। কিন্তু তা নেহাতই অজুহাত বলে মত শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের। এপিএল ঠিকা মজদুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, “গত জানুয়ারি মাসে কারখানায় ভাল উৎপাদনের জন্য শ্রমিকদের উৎসাহ ভাতা দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে লোকসানের কারণ দেখানোটা অজুহাত মাত্র। আমাদের এই বিষয়ে আগাম কিছু জানাননি কর্তৃপক্ষ।” ২০০৫ সালে এক বার কিছু দিনের জন্য কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হলেও কয়েক মাস পরে তা ফের চালু হয়। কিন্তু এ বার যে ভাবে অনির্দিষ্ট কালের কথা বলা হয়েছে নোটিসে, তাতে উদ্বেগে পড়েছেন শ্রমিকেরা। কারখানার রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের এক প্রবীণ কর্মী বলেন, ‘‘শুরু থেকে এই কারখানায় কাজ করছি। অধিকাংশই অস্থায়ী ঠিকা কর্মী। মাসে বড় জোর চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা আয় আমাদের। তাতেই সংসার চালাতে হয়। আচমকা উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা অথৈ জলে পড়েছি।”
অন্ধকারে জেলা শ্রম দফতরও। শ্রম দফতরের তমলুকের সহ-কমিশনার নিরূপম মণ্ডল বলেন, ‘‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দেওয়ার আগে বিষয়টি আমাদের জানানোর কথা। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। শ্রমিক সংগঠনের তরফেও অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে আইন মেনে কারখানা খোলার জন্য আমরা উদ্যোগী হব।”
আগে এই কারখানায় শ্রমিক সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ করত সিটু। রাজনৈতিক পালাবদলের পর কারখানার শ্রমিক সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ আসে তৃণমূলের হাতে। আইএনটিটিইউসি’র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার বলেন, “কারখানা চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শ্রম দফতরকে জানানো হবে।” |
|
|
|
|
|