বেশ কয়েক বছর ধরেই পানীয় জলের সঙ্কট চলছে কালনা ১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায়। বিশেষত, গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকেও পর্যাপ্ত জল মেলে না। পাশাপাশি চাহিদার তুলনায় সংখ্যা কম থাকায় অত্যাধিক চাপে অকেজো হয়ে যায় নলকূপের নানা যন্ত্রাংশ। পঞ্চায়েতের তরফেও ফি বছর নলকূপ সারাতে প্রচুর টাকা বরাদ্দ করতে হয়। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা বহুদিন ধরেই একটি জলপ্রকল্প গড়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সোমবার রাতে এই প্রকল্পেরই শিলান্যাস করলেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। অনেক ক্ষেত্রেই শিলান্যাসের পরেও দীর্ঘদিন পড়ে থাকে প্রকল্পের কাজ। গ্রামবাসীদের আর্জি মেটেনা। তবে এক্ষেত্রে সুব্রতবাবুর আশ্বাস, “শিলান্যাসের দীর্ঘদিন পরে কাজ শুরু হবে এমনটা নয়। আমি নান্দাই ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই প্রকল্পের জন্য অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে উত্তর রামেশ্বরপুর গ্রামে তৈরি হতে চলেছে ভূগর্ভস্থ পানীয় জল সরবরাহের এই প্রকল্প। পাইপলাইনের মাধ্যমে নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকার ১১টি মৌজায় জল সরবরাহ করা হবে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের জন্য খরচ হবে ৬ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা। ২৩৮৫ .৭৭ হেক্টর এলাকাতে থাকবে একটি উচ্চ জলাধার। সেখানে জল ধরবে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার। ৭৩২৮টি বাড়িত জল সংযোগ দেওয়া হবে। রাস্তায় ৫০টি ট্যাপ কলের ব্যবস্থাও করা হবে। প্রায় ২৫ হাজার ৯৫২ জন মানুষ ৭০ লিটার করে জল পাবেন।
সোমবারের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, রাজ্যের ৮টি জেলার ৮২টি ব্লক আর্সেনিক তালিকাভুক্ত। রাজ্যে দূষণমুক্ত পানীয় জলের অভাব রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের জল সরবরাহের পাইপগুলি রক্ষার দায়িত্বও নিতে বলেন তিনি। তিনি জানান, জমির পাশ দিয়ে যাওয়া পাইপ ফাটিয়ে জল বের করে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাতে পানীয় জল পেতে সমস্যা হবে। তাই বাসিন্দাদেরই পাইপ রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। অনুষ্ঠানে হাজির পূর্বস্থলীর বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্ষুদ্রও কুটির, ভূমি ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “নান্দাইয়ে জলপ্রকল্প গড়ার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হল।” অনুষ্ঠানে ছিলেন মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি, জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতররে আধিকারিকেরা। |