রানওয়ে ছোট থাকায় বড় বিমান ওঠানামা করতে পারে না। তাই মরা তোর্সা নদীর উপর ‘বক্স কালভার্ট’ গড়ে কোচবিহার বিমানবন্দরে রানওয়ে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়ার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “মরা তোর্সার গতি বদলে সেটির ওপর কালভার্ট তৈরি করে রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়াতে সরকার ২৫ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। কাজ সম্পূর্ণ হলে এটিআর-৭২ বিমান ওঠানামা করতে পারবে। এয়ারপোর্ট অথারিটি সাহায্য করবে।”
এএআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরে ব্যবহার যোগ্য রানওয়ে ১০৬৯ মিটার। এ ছাড়াও নিয়ম মেনে ৬০ মিটার অব্যবহৃত রানওয়ে করা হয়েছে। ওই রানওয়েতে ১৮ আসনের বেশি বিমান ওঠানামা করা সমস্যা দেখা দেয়। এতে মাথাপিছু যাত্রী ভাড়া বেশি পড়ছে। বেশি সংখ্যক আসন বিশিষ্ট উড়ান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে ২০১১ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে কোচবিহার-কলকাতা উড়ান পরিষেবা চালু হলেও কয়েক মাসের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপরেই রাজ্য সরকার রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে বেশি আসন বিশিষ্ট উড়ান চালুর পরিকল্পনা নেয়।
জেলা প্রশাসন, এএআই কর্তৃপক্ষ সমীক্ষা করে রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ১৪৫৬ মিটার করার পাশাপাশি মরা তোর্সার গতিপথ পাল্টানোর ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠায়। প্রকল্পটি রাজ্য পরিবহণ দফতরে জমা পড়ে। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কম আসনের বিমান চালুর জেরে কলকাতা যাতায়াতে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা ভাড়া দাঁড়ায়। বেশি আসনের বিমান চালু হলে ভাড়া অকমবে। যাত্রী চাহিদা বাড়বে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” এএআই-এর অফিসারেরা জানাচ্ছেন, ৬৪টি আসনের এটিআর-৭২ বিমান ওঠানামার জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য অন্তত ৩২৭মিটার বাড়ানো দরকার। মরা তোর্সার গতিপথ কিছুটা বদলে ‘ইউ’ চেহারায় আনা না গেলে কালভার্টের দৈর্ঘ্য আরও বাড়াতে হত। বাড়তি খরচ এড়াতে গতিপথ পাল্টে বক্স কালভার্ট তৈরির পরিকল্পনা হয়। তবে এখনও বিমান পরিষেবা নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত নন ব্যবসায়ীরা। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “পরিকাঠামোর নানা খামতির জন্য কোচবিহারে উড়ান পরিষেবা থমকে থাকছে। আমরা রানওয়ে বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে সবথেকে খুশি হতাম ছোট উড়ান পরিষেবা নিয়মিত চালু রেখে ওই কাজ হলে।” |