স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে অ্যাডমিট কার্ড পেল না ছাত্রী
রাত পোহালেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু সোমবারও অ্যাডমিট কার্ড হাতে পায়নি পুরুলিয়া শহরের হরিজন কল্যাণ গিরিশচন্দ্র স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী টুম্পা নন্দী। তাই তার পরীক্ষায় বসা অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। শহরের ধোবঘাটা এলাকার বাসিন্দা টুম্পা কলা বিভাগের ছাত্রী। টুম্পার বাবা অসীম নন্দী বলেন, “গত ৭ মার্চ মেয়ে স্কুলে অ্যাডমিট কার্ড আনতে গিয়ে দেখে, ওর অন্য সহপাঠীদের অ্যাডমিট কার্ড এলেও তার কার্ড আসেনি। আমি স্কুলে খোঁজ করে জানতে পারি, যে কোনও একটা শিটে যেখানে অন্য পরীক্ষার্থীদের সই রয়েছে সেখানে ওর সই না থাকায় অ্যাডমিট কার্ড আসেনি।”
জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “আমরা সোমবার ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষিকাকে বলেছি, যে একজন নিয়মিত ছাত্রীর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ল কী ভাবে। আপনারা কেন এরকম একটা ভুল আগে চিহ্নিত করতে পারলেন না। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলের ফলেই এটা ঘটেছে।” প্রধান শিক্ষিকা রেখা চৌধুরী বলেন, “একই শিটে টুম্পা প্রামাণিক ও টুম্পা নন্দীর নাম পাশাপাশি ছিল। সেখানেই ভুল হয়েছে। যাঁদের ভুলে এই পরিস্থিতি, পরিচালন সমিতির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। আপাতত ওই ছাত্রী যাতে পরীক্ষা দিতে পারে তার চেষ্টা চালাচ্ছি।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদের দেওয়া রেজিষ্ট্রেশন শিটে পড়ুয়াদের সই করতে হয়। এই সই করে থাকেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাতে টুম্পার সই না থাকায় অন্য পড়ুযাদের অ্যাডমিট কার্ড এলেও টুম্পার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। টুম্পার কথায়, “গত ৭ মার্চ জানতে পারলাম আমার অ্যাডমিট আসেনি। ওই দিন থেকেই প্রচণ্ড টেনশনে রয়েছি। পড়াশোনায় মন বসাতে পারছি না।” অসীমবাবু একটি দোকানে কাজ করে সংসার চালান। দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে টুম্পাই বড়। তাঁর ক্ষোভ, “স্কুলের ভুলে আমার মেয়ের একটা বছর নষ্ট হতে বসেছে। কোথায় কোন কাগজে সই করতে হবে ও কী করে জানবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব যে, ছাত্রীরা ঠিকঠাক সই করেছে কি না তা দেখে নেওয়া। অন্তত রেজিষ্ট্রেশন শিট সংসদে পাঠানোর আগে সব ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নেওয়া হবে না কেন?”
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিভূতি প্রামাণিক কলকাতা থেকে ফোনে বলেন, “সংসদের পাঠানো শিটে ওই ছাত্রীর সই না থাকায় ওর অ্যাডমিট কার্ড আসেনি।” কেন রেজিষ্ট্রেশন শিট ফেরত পাঠানোর আগে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি? এ প্রসঙ্গে বিভূতিবাবু বলেন, “এটা অবশ্যই ত্রুটি। কীভাবে এটা ঘটল তা আমরা দেখব। তার আগে ওই ছাত্রীর যাতে একটা বছর নষ্ট না হয়, তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এই বিষয়টি বর্তমানে সংসদের সভাপতির এক্তিয়ারে। আমরা তাঁর দ্বারস্থ হয়েছি।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারাণি মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে ওই ছাত্রীর অভিভাবক এসেছিলেন। সব শুনে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। সেখান থেকে আমাকে জানানো হয়েছে যে, ছাত্রীটি ফর্ম পূরণ করেনি ও টাকা দেয়নি। তবু আমি যাতে ছাত্রীটি পরীক্ষায় বসতে পারে তার জন্য সংসদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু এ ব্যাপারে কিছু করার নেই বলে সংসদ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ কথা জেনে আকাশ থেকে পড়েছেন ছাত্রীর বাবা। তাঁর প্রশ্ন, “এটা কী সম্ভব! টাকা দেব না কেন? এখন বাঁচার জন্য তো এ সমস্ত কথা বলা হবেই।” জেলা উচ্চ মাধ্যমিক মনিটরিং কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক কল্যাণপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আমরা সংসদে যোগাযোগ করেছি। চেষ্টা করছি যাতে ওই ছাত্রী পরীক্ষায় বসতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.