অনুগামীদের ঐক্যবদ্ধ করতে আসরে মমতা
পরিষেবা বিল নিয়ে সরকারি কর্মীদের অভয় মুখ্যমন্ত্রীর
তুন লোক-পরিষেবা বিল নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অভয়-বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসংস্কৃতিহীনতা দূর করতে তৈরি লোক-পরিষেবা বিল বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই পেশ হবে। বিলটি নিয়ে সরকারি কর্মীদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা বিলক্ষণ জানেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল-অনুগামী রাজ্য সরকারি কর্মীদের সমাবেশে মমতার স্পষ্ট ঘোষণা, “যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ভয় পাওয়ার কী আছে!”
নতুন লোক-পরিষেবা বিলে বলা হয়েছে, কোনও সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ আনলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর শাস্তি হবে। বাম জমানায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে কর্মসংস্কৃতিহীনতার অভিযোগ উঠেছে। মমতা ক্ষমতায় এসে সরকারি কর্মীদের কাজে ঢিলেমির প্রবণতা রুখতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করেছেন। লোক-পরিষেবা বিল তারই অন্যতম। কিন্তু অনেক সরকারি কর্মীই যে ওই বিলের অপপ্রয়োগের শিকার হওয়ার ভয় পাচ্ছেন, তা বুঝতে পেরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। সিপিএম পার্টি অফিস থেকে চক্রান্ত করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই শাস্তি হবে না। কমিশন থাকবে। তারা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, যে সব সরকারি কর্মী জনগণকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করছেন, তাঁরা সিপিএম ও সরকারের ভাবমূর্তি কলুষিত করতে চান।
তৃণমূল অনুগামী রাজ্য সরকারি কর্মীদের সমাবেশে। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
তিনি ‘দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন’ নীতিতে চলছেন, বোঝাতে এ দিনের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা “যাঁরা ভাল কাজ করবেন, যত বেশি ফাইল ক্লিয়ার করবেন, তাঁদের মা-মাটি-মানুষের সরকার ইনসেনটিভ দেবে।” তবে সরকারি কর্মীদের কর্মসংস্কৃতির মান উন্নত করতে গিয়ে তিনি যে তাঁদের বিশ্রাম-অবকাশ কেড়ে নেবেন না, এ দিন সে বার্তাও দিয়েছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, “ক্যারম খেলবেন না কেন? নিশ্চয়ই খেলবেন। আপনাদেরও বিশ্রাম-অবকাশের দরকার আছে। তবে দুপুরের খাওয়ার সময় খেলুন।”
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের অভিমত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে সরকারি নীতির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করাতে চাইছেন। সেই প্রেক্ষিতেই দলের অনুগামী সরকারি কর্মীদের এক ছাতার তলায় আনার প্রয়োজনীয়তা বুঝেছেন শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তা ছাড়া, ভোটের প্রশাসনিক কাজে সরকারি কর্মীদের ব্যবহার করার ফায়দা পুরোপুরি পেতেও তাদের এক সংগঠনের আওতায় আনার প্রয়োজন ছিল তৃণমূলের। বস্তুত, সেই কারণেই এ দিনের সমাবেশ। ২০০৯ থেকেই তৃণমূলপন্থী রাজ্য সরকারি কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। কখনও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, কখনও দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় চেষ্টা করেছেন। এমনকী, সাংবাদিক সম্মেলন করে ঐক্যবদ্ধ সংগঠন হিসেবে ‘ইউনাইটেড স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনে’র নাম ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু কোনও চেষ্টাই ফলপ্রসূ হয়নি। তৃণমূল সরকারে আসার পরে প্রথম পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। তার আগে এই সমাবেশে মুকুলবাবু, পার্থবাবু, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, শ্রমিক নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও সরকারি কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
এ দিনের সমাবেশে সিপিএম এবং কেন্দ্রের কংগ্রেস জোট সরকারকেও তোপ দেগেছেন মমতা। সিপিএমকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সব ট্র্যাফিক পুলিশ খারাপ নন। ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে শাস্তির বিধানও আছে। কিন্তু অনেক ট্র্যাফিক পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে জরিমানা করছেন। ওষুধ চাইলে সিপিএম মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মীরা বলছেন ওষুধ নেই। সরকার জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে কোনও সেস নিচ্ছে না। কিন্তু দালালরা ওই প্রকল্পে পুকুর কাটার জন্য গ্রামের গরিব মানুষের থেকে ৩০ হাজার টাকা সেস চাইছে।” মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “আমরা এদের চিহ্নিত করছি। আমার নিজস্ব নেটওয়ার্কও আছে। তা দিয়েও এদের খুঁজে বার করব।”
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা এবং অন্যান্য আর্থিক দাবিদাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল হলেও সবটা পূরণ করা যাচ্ছে না কেন্দ্রের দোষে। এ দিনও বন্ধ-রাজনীতির সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আপনাদের সত্যিকারের ক্ষোভ থাকলে বলার আগেই করে দেব। কিন্তু বন্ধের নামে কর্মসংস্কৃতি পার্টির পকেটে পুরতে দেব না। আপনারা বন্ধের দিন কাজ করার সাহস দেখিয়েছেন। আপনাদের ধন্যবাদ।”

একটাই প্রবলেম
আঁতেল দাঁতেল সব না। মনে রাখবেন এই সমাজে যারা ভোট দেয়, তারা দশটা কথা বললে... জেনে রাখবেন, যে গরু দুধ দেয়, সেই গরুর লাথিও খাওয়া যায়, প্রবাদে আছে। আর কয়েকটা লোক আছে, ভোটও দেয় না, না দেয় ভোট, না হয় ভোকাট্টা। এদের কাজ হচ্ছে খালি বসে বসে ভুটভুটি করে। ভুটভুটি মানে কী? টুকটুকি করে। টুকটুকি মানে কী? কিচিরমিচির করে। কিচিরমিচির মানে কী? বকবকম করে। বকবকম মানে কী? কটূক্তিপনা করে। মন্থরাদের দল। মানে কৈকেয়ীদের দল। কৈকেয়ীদের একেবারে বাসা। এদের কাজই হচ্ছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একেবারে প্ল্যান করে চক্রান্ত করা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.