এশীয় গল্ফে তাজ ফের বাঙালির মাথায়
প্লে-অফে চার ফুটের শটটা হোল-এ ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মুঠোয় ধরা গল্ফ ক্লাব তুলে ধরলেন আকাশে। সেল-এসবিআই ওপেনে নিজের খেতাব ধরে রাখতে পারার আনন্দে থরথর কাঁপছে গোটা শরীর। পঁচিশ বছরের বঙ্গসন্তানের মুখে একই সঙ্গে খেলে যাচ্ছে অবিশ্বাস আর উচ্ছ্বাস! বলেই ফেললেন, “বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি ট্রফিটা ধরে রাখতে পেরেছি! পরপর দু’বার ট্রফি জেতা যে কী আনন্দের, বলে বোঝাতে পারব না।” বলার সময় অনির্বাণ লাহিড়ীকে দেখে মনে হচ্ছিল, যেন ঘোরের মধ্যে আছেন।
থাকারই কথা। এ দিন তিন লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কারমূল্যের এই টুর্নামেন্টের শেষ হোল-এ নাটকীয় বার্ডি করে খেলা নিয়ে যান প্লে-অফে। ভারতীয় গল্ফের আর এক তরুণ তুর্কি রশিদ খানের সঙ্গে অনির্বাণের দিনভর চলা যুদ্ধটা তখন বলা চলে একেবারে রুদ্ধশ্বাস ক্লাইম্যাক্সে। আর সেই চাপের মুখে অনির্বাণ স্নায়ু শান্ত আর নিশানা নির্ভুল রেখে লক্ষ্যভেদ করে গেলেন। এশীয় ট্যুরে এই নিয়ে নিজের তৃতীয় খেতাব জিতলেন তিনি। এর আগে ২০১১-য় প্যানাসনিক ওপেন এবং গত বছর এই সেল-এসবিআই ওপেনেই জিতেছিলেন। পুরোপুরি ভারতীয় স্পনসরশিপে এবং ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত এই এশীয় ট্যুর টুর্নামেন্টে ২০০৯-এ ৩২-আন্ডার ২৫৬ স্কোর করে এশীয় ট্যুর রেকর্ড গড়েছিলেন তাইল্যান্ডের তারকা চাপচাই নিরাট। অনির্বাণ ১৫-আন্ডার ২৭৩ তুলে এ দিন সেই রেকর্ডের ধারেকাছে যেতে না পারলেও, তিনিই প্রথম গল্ফার যিনি টানা দু’বার সেল-এসবিআই ওপেন চ্যাম্পিয়ন হলেন।
অনির্বাণের ট্রফি।
মজার কথা, অনির্বাণের তিনটে খেতাবই এল এই দিল্লি গল্ফ ক্লাবের কোর্সে খেলে। তিন বারই জিতলেন প্লে-অফে! অভিনন্দনে ভাসতে ভাসতে অনির্বাণ নিজেও বলছিলেন, “এটা আমার পয়া কোর্স।” তবে আত্মতুষ্ট হয়ে পড়তে চান না। বলে দিলেন, “মরসুমটা ভালই শুরু করলাম। এ বার পরের সপ্তাহে আভান্থা মার্স্টাসেও ভাল করতে চাই।” আভান্থায় নামার আগে এই টুর্নামেন্ট থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ র্যাঙ্কিং পয়েন্টও জোগাড় করে ফেললেন অনির্বাণ। গতবার এশীয় ট্যুরের অর্ডার অব মেরিট তালিকায় দশম স্থানে থাকা গল্ফারের বিশ্ব র্যাঙ্কিংও যাতে এগোতে পারে।
গতকাল বাংলাদেশের সিদ্দিকুর লিডারবোর্ডে অনির্বাণকে টপকে এক নম্বরে ছিলেন। আর অনির্বাণের ঠিক দুই শট পিছনে ছিলেন রশিদ। এ দিন অবশ্য দুই ভারতীয়ের দুরন্ত ফর্মের পাশে সময় ভাল গেল না সিদ্দিকুরের। শেষ রাউন্ডে ৭৩ স্কোর-সহ তৃতীয় হলেন। রশিদ আবার শুরু থেকেই চাপে রেখেছিলেন অনির্বাণকে। ৬৬ স্কোর করে রশিদ যখন খেলা শেষ করলেন, তখন তাঁকে ছুঁতে গেলে অনির্বাণকে শেষ হোল বার্ডি করতেই হবে। চাপের মুখে দশ ফুট দূরত্ব থেকে বার্ডি করে ৬৮ স্কোর তুলে অনির্বাণ ম্যাচ নিয়ে যান প্লে-অফে। যেখানে রশিদের তৃতীয় শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আর অনির্বাণ চার-ফুটের বার্ডি করে জিতে নেন ট্রফি।
৫৪ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের বিজয়ীর চেক হাতে অনির্বাণ বলছিলেন, “প্লে-অফে কী করব, সেটা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। যদিও এই নিয়ে তৃতীয় বার প্লে-অফ খেলে জিতলাম, কিন্তু এ বারের মতো এতটা ঠান্ডা মাথায় আগে কখনও খেলিনি।”

অনির্বাণের ঝুলিতে
২০১১-প্যানাসনিক ওপেন (দিল্লি গল্ফ ক্লাব)

২০১২- দ্য ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় রাউন্ডে হোল-ইন-ওয়ান (রয়্যাল লাইথাম অ্যান্ড সেন্ট অ্যানস গল্ফ ক্লাব)
এশীয় ট্যুরের তিনটি খেতাবই প্লে-অফে জিতে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.