|
|
|
|
|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
৩ মার্চ - ৯ মার্চ |
|
না, অপমান নয়। রাগ |
• কায়রো • এ দেশে বসে বোঝা যাবে না কত বড় বাধা পেরোতে হয়েছে ইয়াসমিনদের। এ দেশে তো আর তাঁদের বোরখা পরে ঘুরতে হয় না। পুরুষের দিকে চোখ তুলে কথা বললে একঘরে হওয়ার ভয় থাকে না। রাস্তায় আন্দোলনে এসে পা মেলালে সারা জীবনের মতো অচ্ছুত হয়ে যেতে হয় না। মিশরের মেয়ে ইয়াসমিনরা জানেন, ভারতের মতো দেশ বুঝতেও পারবে না কেন, কোথায়, কেমন তাঁদের সংগ্রাম। মার্চের ৭-৮ তারিখ (ঘটনাচক্রে সেটা আবার নারী দিবস ‘সিজ্ন’) পথে নেমেছিলেন ইয়াসমিনের মতো মিশরীয় মহিলারা, যাঁদের বেশির ভাগই কায়রোবাসী হলেও অন্যান্য শহর-মফস্সলের মানুষও কম ছিলেন না! মেয়েদের উপর, বিশেষত প্রতিবাদী মেয়েদের উপর পুলিশ-প্রশাসনের যে যৌন অত্যাচার, তার বিরুদ্ধে চিৎকৃত ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁরা, সপাটে বলে দিলেন, কী ভাবে পুলিশ সামান্য অজুহাতেই তাঁদের গায়ে হাত দেয়, ব্যক্তিগত শরীরস্থানে আঘাত করে, কুরুচিপূর্ণ কুৎসিত ভাষায় তাঁদের আক্রমণ করে। |
|
তাঁরা বলে দিলেন, প্রতিবাদী মাত্রেই রাষ্ট্রের শত্রু ঠিকই, কিন্তু প্রতিবাদী পুরুষকে শাসন করার পথ আর প্রতিবাদী মেয়েদের ঢিট করার পথ কতখানি আলাদা। রাষ্ট্র শুধু হিংসাই জানে না, যৌন হিংসা রাষ্ট্রের অতিপ্রিয় অস্ত্র।
ইয়াসমিন আল-বারামোয়ে এমনই এক জন মেয়ে, প্রতিবাদী মেয়ে। গত নভেম্বরে টেলিভিশনের টক-শো’-য় এসে দেখিয়েছিলেন তাঁর ছেঁড়া ট্রাউজার্স, ঠিক কোন জায়গাটা কী ভাবে ছিঁড়ে দিয়েছে কায়রোর তহরির স্কোয়্যারে টহলরত পুলিশ! তাঁকে টানতে টানতে অনেক দূর নিয়ে যায় তারা, পুরো সময়টা বিভিন্ন হাত ছুঁয়ে-ধরে-পিষে থাকে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ। “আমার একটুও অপমান হয়নি, শুধু প্রচণ্ড রাগে দাউদাউ করে জ্বলছিলাম”, ইয়াসমিনের ঘোষণা। কী পরিচিত এই গল্প। ভারতেও প্রত্যহ এই একই অভিজ্ঞতা অগুনতি। মিশরে ইয়াসমিনরা প্রতিবাদ করেছেন। ভারতে তেমন কিছু আজও হয়নি। অথচ মিশরে কিন্তু এর জন্য প্রবল সামাজিক, পারিবারিক, ব্যক্তিগত দাম দিতে হবে ইয়াসমিনদের, তবু ওঁরা সে দিন রাস্তায় নেমে দিনভর মিছিল করেছেন। আমরা করিনি।
|
জামাই হওয়ার বিপদ |
• আম্মান • জর্ডনে মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়লেন সুলেমান আবু ঘাইথ। আল কায়দার উচুঁ দরের নেতা, এবং ওসামা বিন লাদেনের জামাই। আদতে কুয়েতের নাগরিক এই উগ্রপন্থীর আসল নাম কী, জানা যায়নি। ৯/১১-র হামলার পর আল কায়দার ভিডিয়ো-বার্তায় নিয়মিত দেখা যেত তাঁকে। আল কায়দার যে সন্ত্রাসীরা ১৯৯০-এর দশক থেকে সক্রিয় ছিলেন, এবং এত দিন লুকিয়ে ছিলেন, এমন অতি-সংখ্যালঘুদের অন্যতম আবু ঘাইথ। |
|
অনুমান, ইরানে ছিলেন তিনি। মাসখানেক আগে তুরস্কে প্রবেশ করেন। সেখানে গৃহবন্দি হন। তুরস্কের আদালত জানায়, তাঁকে বন্দি করার মতো কোনও অপরাধ সে দেশে তিনি করেননি। ছাড়া পেয়ে পৌঁছোন জর্ডনে। খবর যায় মার্কিন গোয়েন্দাবাহিনীর কাছে। জর্ডন থেকেই গ্রেফতার হলেন। মার্কিন বক্তব্য: আমেরিকার শত্রুদের যথার্থ বিচারের পথে দূরত্ব বা সময় কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
|
নজরবন্দি |
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আন কি জানেন ঠিক কী করতে চাইছেন তিনি? কেবল আমেরিকা নয়, ইউরোপের সমস্ত দেশ, এমনকী রাশিয়া এবং চিনও হতবাক এই ভদ্রলোকের কাণ্ডকারখানায়। গত শুক্রবার রীতিমত যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন তিনি, ‘অল-আউট ওয়ার’-ই নাকি এখন তাঁর লক্ষ্য। কার সঙ্গে? অবশ্যই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। এই দুটি দেশকে নাকি তিনি আগুনের বন্যায় ভাসিয়ে দেবেন! বাকি যারা সেই দলে যোগ দেবে, তাদেরও ছারখার করে দেবেন! বাস্তবিক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনও রাষ্ট্রনেতার গলায় এত চরম হুঙ্কার শোনা গিয়েছে কি না সন্দেহ।
কেন এত রাগ হয়েছে তাঁর? কারণ, রাষ্ট্রপুঞ্জ (সোল ও ওয়াশিংটনের উশকানিতে) উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আবার নতুন রাউন্ড নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। তিনি তেমন কিছু করেননি কেবল বারংবার নিষেধ সত্ত্বেও তৃতীয় বার পরমাণু মিসাইল পরীক্ষা করছিলেন তাতেই রাষ্ট্রপুঞ্জের এই দুর্ব্যবহার! উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে পশ্চিমি দুনিয়ার টক্কর অনেক পুরনো গল্প, কিন্তু ঘটনা হল, সত্যিই কি এই পদক্ষেপের পরিণাম তিনি ভেবে দেখেছেন? পরমাণু-অস্ত্র-ভাণ্ডার হাতে নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল পশ্চাৎপর দেশের পক্ষে এমন হুমকি দেওয়ার অর্থ কী, বুঝতে পারছেন তো কিম জং-আন? মিসাইল পরীক্ষা সফল হয়েছে বলেই হয়তো এত দুঃসাহস তাঁর। দুই কোরিয়ার রেষারেষি হয়তো সত্যিই একটা যুদ্ধের আকার নিতে চলেছে। কিন্তু একমাত্র ‘ফ্রেন্ড-গাইড-ফিলসফার’ চিনের কথাও শুনছে না উত্তর কোরিয়া, নতুন ব্যাপার বটে! বেজিং এ বার প্রথম থেকেই কূটনৈতিক বিজ্ঞতার প্রমাণ দিচ্ছে, পিয়ংইয়ং-এর পাশে না দাঁড়িয়ে বার বার সতর্ক করছে তাকে, গলার স্বর নামিয়ে কথা বলতে পরামর্শ দিচ্ছে, বকুনিও দিচ্ছে। চিন যে কত বড় সুপারপাওয়ার খেলোয়াড়, সাম্প্রতিক কোরিয়া সংকট তা প্রমাণ করে দিল। আর কিম জং-আন প্রমাণ করলেন, তিনি এতই অবিমৃশ্যকারী যে বেজিং-ও তাঁকে ছেড়ে যেতে বসেছে! |
|
|
|
|
|