টাকার অভাবে কর্মীদের পাওনাগন্ডা মেটাচ্ছে না সংস্থাটি। অথচ সেই কর্তৃপক্ষ উৎসবের আয়োজন করতে দেদার টাকা খরচ করছেন। ন্যাশনাল টেক্সটাইল কর্পোরেশন (এনটিসি) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই রকম অভিযোগই উঠেছে।
এনটিসি-র তৃণমূল কংগ্রেস ট্রেড ইউনিয়নের অভিযোগ, শুধু বর্তমান কর্মীদেরই নয়, এমনকী যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁদেরও বকেয়া মেটানো হয়নি। অথচ সম্প্রতি ৩০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক উৎসবের আয়োজন করলেন কর্তৃপক্ষ। অবশ্য এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে এনটিসি-র পূর্বাঞ্চলের এক কর্তা বলেন, “পাওনা মেটানোর সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানের কোনও সম্পর্ক নেই। কর্মীদের পাওনা মেটানো হবে এ ব্যাপারে গৃহীত নীতি মেনে।”
ওই ইউনিয়নের নেতা সন্তোষ মজুমদার অভিযোগ করেন, “টাকার অভাবের কারণ দেখিয়ে কর্মীদের বেশ কিছু পাওনাগন্ডা মেটাচ্ছেন না এনটিসি কর্তৃপক্ষ। অথচ চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই ৩০ কোটি টাকা খরচ করে ‘নর্থ ইস্ট ফেস্ট’ শীর্ষক এক এলাহি উৎসব করেছেন তাঁরা। আমরা অবিলম্বের কর্মীদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি করেছি।”
কর্মীদের কী কী পাওনা এখন মেটানো বাকি? এই প্রশ্নের উত্তরে সন্তোষবাবু বলেন, “এনটিসি কর্তৃপক্ষ কর্মীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা মূল বেতনের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য যে-বকেয়া পাওনা হয়েছে, বহু অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে তা এখনও মেটানো হয়নি। এনটিসি-র বিপণন বিভাগের কর্মীদের বেতন সংশোধন হয়েছে। কিন্তু এ বাবদ যে-বকেয়া পাওনা হয়েছে, তার ৫০ শতাংশও এখনও মেটাননি কর্তৃপক্ষ।”
এনটিসি-র যে-সব কর্মী ২০০৮ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত চাকরিতে ছিলেন তাঁদের মহার্ঘ ভাতার ৫০ শতাংশ মূল বেতনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে পরিচালন পর্ষদে এই সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়, যে-সব কর্মী ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০০৮-এর ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবসর নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও বেতনের সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা মিশিয়ে দেওয়ার ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। এর মধ্যে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীও রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ চাকরিরত কর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দিলেও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে ইউনিয়নকে চিঠি দিয়ে জানান, অর্থের ব্যবস্থা হলে তবেই ওই বকেয়া মেটানো হবে। দীর্ঘ দিন কেটে যাওয়ার পরেও সেই বকেয়া কর্তৃপক্ষ মেটাননি বলে অভিযোগ ইউনিয়নের।
পাশাপাশি এনটিসি-র বিপণন কর্মীদের বেতন সংশোধন সংক্রান্ত বকেয়ার যে ৫০% মেটানো বাকি আছে, তার জন্য খরচ হওয়ার কথা ২০ লক্ষ টাকার মতো। প্রায় ৭ মাস কেটে যাওয়ার পরেও ওই টাকা মেটায়নি এনটিসি। তাই ইউনিয়নের প্রশ্ন, টাকার অভাবে যখন কর্মীদের পাওনা মেটাতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ, তখন উৎসবের জন্য জলের মতো টাকা খরচের যৌক্তিকতা কোথায়? |