তাঁর পদবি খান। এই ‘অপরাধে’ বেশ কয়েক বার আমেরিকার বিমানবন্দরে রীতিমতো হেনস্থা হতে হয়েছে তাঁকে। না, শাহরুখ খান নয়। এ বার এই অভিযোগ জানিয়েছেন ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’, ‘লাইফ অফ পাই’ খ্যাত অভিনেতা ইরফান খান।
একটি টেলিভিশন শোয়ের সেটে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন ইরফান। জানালেন, এক বার ২০০৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে, আর তার পরের বছরই নিউ ইয়র্ক বিমানবন্দরে অকারণে হেনস্থা হতে হয় তাঁকে। কেমন ব্যবহার করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে?
উত্তরে জানালেন, “বেশ বড় বড় বন্দুক হাতে কয়েক জন পুলিশকর্মী এসে ডেকে নিয়ে গিয়ে বসালেন একটা বড় ঘরে। সঙ্গে নির্দেশ, কারও সঙ্গে কথা বলা যাবে না। মোবাইল ফোন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে না। এ ভাবে কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হল আমাকে।” প্রথম বার তবু এক রকম। কিন্তু পর পর কয়েক বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ তিনি।
স্লামডগ মিলিওনেয়ার, লাইফ অফ পাই-এর মতো অস্কার জয়ী ছবি, স্পাইডারম্যানের মতো জনপ্রিয় হলিউডি ছবিতে অভিনয় করেছেন ইরফান। সেই হিসেবে আমেরিকায় যথেষ্ট পরিচিত মুখ তিনি। তার পরেও এমন অভিজ্ঞতার মুখে কেন পড়তে হল ইরফানকে? তাঁর মত, ছবিতে খান পদবি ব্যবহার করেন না। হলিউডে ইরফান নামেই তাঁর পরিচিতি। কিন্তু পাসপোর্টে পদবি, ধর্ম সব কিছুই লেখা থাকে। জানালেন, “এক বার অভিবাসন দফতরের অফিসারকে প্রশ্ন করেছিলাম, দেশে যদি ঢুকতে দিতেই না চান, খামোখা ভিসাগুলো তাঁরা দেন কেন?” ইরফান জানাচ্ছেন, প্রশ্নটা শুনেই খেপে গিয়েছিলেন ওই অফিসার। তেড়ে এসে বলেছিলেন, ‘ভয় দেখাচ্ছেন আমাকে!’
এই ধরনের অভিজ্ঞতার পর যখন ‘মাই নেম ইজ খান’ দেখেছিলেন, তখন মনে হয়েছিল যেন তার অভিজ্ঞতার ছবিই ফুটে উঠেছে রুপোলি পর্দায়। অবশ্য শুধু ইরফান বা শাহরুখ খান-ই নন। এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে কবীর খান, জন আব্রাহাম, নীল নীতিন মুকেশের মতো অভিনেতাকেও। বাদ যাননি ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম পর্যন্ত।
আগামী দিনে যদি ফের কোনও মার্কিন বিমানবন্দরে একই ভাবে হেনস্থা হতে হয়? জবাব যেন তৈরিই ছিল। বললেন, “এখন কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে আয়োজকদের আগাম জানিয়ে দিই, বিমানবন্দরে আটকালে ওখান থেকেই টিকিট কেটে দেশে ফিরে আসব।” |