|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
বিপণনে নূতন দিশা অমীশ |
বইপোকা |
বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। কথাটি বঙ্গীয় বইপাড়ার মুনাফা ঠাকরুনেরা ভালই বুঝেন। কিন্তু বিপণনের যে নব নবোন্মেষশালিনী প্রতিভা লক্ষ্মীকে ঠায় বসাইয়া রাখিতে পারে তাহার অভাব এই পাড়ায় বড় প্রকট। তাই সংবাদপত্রের আলোচনা, ঠেলা-বিক্রির (পুশ সেল-এর আপাতত এই বাংলা করিলাম, উন্নততরটি পাইলে বলিব) উমেদারি এবং দুই চারিটি খাপ-প্রকাশ— এই কূপমধ্যে ঘুরিয়া মরে বাংলা গ্রন্থের বিপণন। কথাকটি মনে আসিল অমীশের সূত্রে। অতি-সম্প্রতি বাজারে আসিয়াছে তাঁহার শিভা ট্রিলজি-র শেষ গ্রন্থটি, দ্য ওথ অব দ্য বায়ুপুত্রজ। পূর্ববর্তী দুইটি ছিল দি ইমমর্টালস অব মেলুয়া এবং দ্য সিক্রেট অব দ্য নাগাজ। নামগুলি নামমাত্র, গ্রন্থগুলির সাহিত্যগুণও এই স্থলে আলোচ্য নহে। ত্রয়ী-র প্রথমটি দেড় সপ্তাহে বেস্টসেলার তালিকার শীর্ষে উঠিয়াছিল। তাহার পরে দুই বৎসরে অমীশের গ্রন্থ বিক্রয় হইয়াছে দশ লক্ষ, যাহার মোট প্রচ্ছদমূল্য প্রায় বাইশ কোটি টাকা। ভারতবর্ষের গ্রন্থবাজারে পরিসংখ্যানটি বিস্ময়কর। কিন্তু তাহা অপেক্ষাও সেলামযোগ্য অমীশের বিপণনবুদ্ধি। প্রথম গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়টি তিনি গ্রন্থপ্রকাশের পূর্বেই বিবিধ খুচরা বিক্রয়-শৃঙ্খলে বিনামূল্যে দিয়াছিলেন, গ্রন্থ লইয়া তৈরি ভিডিয়ো আপলোড করিয়াছিলেন ইউ টিউবে, মাল্টিপ্লেক্সে বলিউডি ফিল্মের ন্যায় গ্রন্থের ট্রেলার প্রদর্শিত হইয়াছিল। এমনকী গ্রন্থটি লইয়া অডিয়ো-অ্যালবামও প্রকাশিত হয়। তিনি ঐতিহাসিক হইতে চাহিয়াছিলেন, তাহাতে প্রভূত অর্থ-সংস্থান নাই বলিয়া বাণিজ্য-ব্যবস্থাপক হইলেন। গ্রন্থের সহিত বিদ্যা, দেবত্ব ইত্যাদিকে জড়াইয়া যে অর্থ-হীন শুচিতার মোহ আবরণ ঘিরিয়া থাকে এই ডিজিটাল ভারতেও, বারাণসীর পণ্ডিত-পরিবারের সন্তান অমীশ ত্রিপাঠী তাহা ঝাড়িয়া ফেলিতে পারিয়াছেন, ইহা অনুসরণীয়। |
|
|
|
|
|