হাতির হানায় মৃত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে তিন ম্যানেজারকে মারধরের জেরে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে বাগান ছাড়লেন মালিক পক্ষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের আটিয়াবাড়ি বাগানে ঘটনাটি ঘটেছে। চার কর্তা বাগান ছেড়ে চলে যান। শুক্রবার কারখানার গেটে নোটিস ঝুলতে দেখা যায়। শ্রমিকদের একাংশের কারণে কর্তৃপক্ষ বাগান বন্ধ করল কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্যরা। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “চা বাগান বন্ধ হওয়ার কথা শুনেছি। শ্রম আধিকারিকদের ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বাগানটি পুনরায় চালু করাতে নিতে বলেছি।” বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার ত্রিযুগনারায়ণ পাণ্ডে বলেন, “শ্রমিকরা যে ভাবে হামলা চালায় তাতে নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। বাগান ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।”
বুধবার সন্ধ্যায় বক্সা বনাঞ্চলের একটি মত্ত হাতি আচমকা বাগানে ঢুকে পড়ে। পাহারা দিচ্ছিলেন অস্থায়ী শ্রমিক জেরম মিনজ। হাতিটি আচমকা তাঁকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছাড় মেরে পিষে দেয়। শ্রমিককে আক্রমণের পরে এক কিশোর আদিল ওঁরাও-কে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ছুড়ে দেয় হাতিটি। ঘটনাস্থলে মারা যান অস্থায়ী শ্রমিক। আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে অপর কিশোরের চিকিৎসা চলছে। |
এই ঘটনার পরে বাগানে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বন দফতরের জিপ হাতি তাড়াতে আটিয়াবাড়ি বাগানে পৌঁছলে জিপ ভাঙচুর হয়। বাগানে হাতির হানার ঘটনা ঘটলেও ম্যানেজাররা রাতভর ওই শ্রমিকদের পাশে ছিলেন না কেন সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ দেখান কিছু শ্রমিক। বৃহস্পতি বার মৃত অস্থায়ী শ্রমিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ সহ বাগানের বাসিন্দা জখম কিশোরের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার দাবিতে দফতর ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। কারখানায় তিন ডেপুটি ম্যানেজারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সিনিয়র ম্যানেজারকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ইটে তাঁর মাথা ফেটে যায়।
ইনটাকের বাগান ইউনিট-এর সভাপতি বলিরাম বরাইক এই প্রসঙ্গে বলেন, “বাগানে মাঝেমধ্যে হাতি ঢুকে পড়ে। হাতি তাড়াবার জন্য কর্তৃপক্ষ পটকা বা অন্য কোনও সামগ্রী দেননি। বন দফতরের কাছ থেকে তা মিলছিল না বলে ক্ষোভ ছিল। তা বলে এভাবে বাগান বন্ধ করার ঘটনা মানা যায় না।” আরএসপি নেতা শম্ভু নন্দীর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কয়েক জনের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ চা বাগানের শ্রমিকরা। বাগানের শ্রমিক কুমারী ওঁরাও বলেছেন, “যা টাকা পাই তা দিয়ে কোনমতে সংসার চলে। বাগান বন্ধ হয়ে থাকলে তো সমস্যায় পড়তে হবে।” |