আম রসিকদের কাছে সুখবর। এ বার মালদহের আম মিলতে পারে সস্তায়। চাষিরা জানাচ্ছেন, মালদহের প্রতিটি আমগাছ মুকুলে মুকুলে ভরে গিয়েছে। যা সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ আম গাছে ব্যাপক হারে মুকুল এসেছে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারি কর্তার বলছেন, গাছে যা মুকুল এসেছে তার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ টিকে থাকলে এবার মালদহে আমের ফলন রেকর্ড করবে। যা আগের সমস্ত রেকর্ডকে ভেঙে দেবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের উপ -অধিকর্তা প্রিয়রঞ্জন সানিগ্রাহি বলেন, “অনুকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে এবার জেলায় আমের রেকর্ড ফলন হবে। আশা করছি, তিন লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। যা আমের ফলনে মালদহে সবর্কালীন রেকর্ড হবে।”
শেষ বার ২০১০ সালে মালদহে আমের ফলন হয়েছিল ৩ লক্ষ মেট্রিক টন। জেলা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের উপঅধিকর্তা জানান, বেশিরভাগ আম চাষিরা আগে নিয়মিতভাবে গাছের পরির্চযা করতেন না। বেশি ফলনের আশায় যথেচ্ছভাবে সিন্থেটিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতেন। এতে ফলন কমে যাওয়ার পাশাপাশি আমের গুনগত মানও নামতে শুরু করেছিল। গত ৫ -৬ বছর থেকে জাতীয় উদ্যানপালন মিশনের সহযোগিতায় গাছের ধারাবাহিক পরির্চযা, সঠিক ওষুধ প্রয়োগ, সিন্থেটিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করে জৈব সার ব্যবহার করা ও আম চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সচেতন করা হয়েছিল। এতে জেলার জেলার আমগাছগুলি মুকুলে ভরে গিয়েছে।
মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুবোধ মিশ্র বলেন, “এবার যে পরিমাণে আমগাছে মুকুল এসেছে তা আমি দেখিনি। কিন্তু ভয় হচ্ছে এত মুকুল শেষ পযর্ন্ত থাকবে তো। যদি প্রকৃতি সহায় থাকে তবে গত বছরের চেয়ে অর্ধেক দামে আম খাওয়াব মানুষকে।” তিনি জানান, জেলার ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর আম বাগানে ২০১২ সালে ১ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন ফলন হয়েছিল। কম ফলনের জন্য গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার সবকিছু ঠিক থাকলে দাম অনেক কম হবে।
ফলনের বেশি আশা দেখা দিতেই আম ব্যবসায়ীরা ভিনদেশে রফতানি করার তোড়জোড় শুরু করেছেন। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উজ্জল সাহা বলেন, “এখানকার আম ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, আমেরিকা ও বাংলাদেশে রফতানি হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রতি এক কেজি আমে ১৭ টাকা ডিউটি চার্জ ধার্জ করায় গত দু’বছর থেকে বাংলাদেশে আম রফতানি কমে যায়। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে ডিউটি চার্জ কমানোর জন্য আবেদন করেছি।” |