সিপিএম প্রার্থী করবে ঘরছাড়াদের
ন্দাস, পাত্রসায়রের মতো অগ্নিগর্ভ এলাকায় সিপিএম প্রার্থী হয়ে ভোটে যে দাঁড়াবে, তাকেই ঘরছাড়া করবে তৃণমূল। তাই যারা এখন ঘরছাড়া, তাদের থেকেই পঞ্চায়েতে প্রার্থী বাছাই করা হবে। রাতের অন্ধকারে দলের কর্মীরা দেওয়ালে পোস্টার সাঁটবেন। বাঁকুড়ায় এমনই সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের আশঙ্কা রয়েইছে। কিন্তু ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত’ এলাকায় দলের অন্য কর্মীদের তুলনায় ঘরছাড়াদের প্রার্থী করায় ঝুঁকি অনেক কম, মনে করছে সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা বাঁকুড়ার জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র বলেন, “তৃণমূল ভয় দেখিয়ে আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করবে, এটাই প্রত্যাশিত। তাই ওই সব এলাকায় দলের ঘরছাড়া কর্মী-সদস্যদের প্রার্থী করায় অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিষ্ণুপুর মহকুমার ইন্দাস ও পাত্রসায়র ব্লকে তৃণমূল-সিপিএমের সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যায়। সিপিএমের একদা শক্ত ঘাঁটি বিষ্ণুপুর মহকুমার বিভিন্ন গ্রামে এর পর থেকেই তৃণমূলের ক্ষমতা বাড়তে থাকে, আর কোণঠাসা হতে থাকে সিপিএম। জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আটটি দখল করে তৃণমূল। এর পরেই ঘর ছাড়েন বহু সিপিএম কর্মী। বর্তমানে সংখ্যাটা প্রায় ৩০০। সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের অনেক সদস্যও পদত্যাগ করেন। বাঁকুড়া জেলার মূলত বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকাতেই এই ধরনের ঘটনা বেশি। একই অবস্থা হুগলির গোঘাট, আরামবাগ, খানাকুল এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, শালবনি, কেশপুর, গোয়ালতোড়েও।
মানুষের নিজের বাড়িতে বসবাস করা মানবাধিকার হিসাবেই স্বীকৃত, বলছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের এক সদস্য জানান, মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ঘোষণায় মানুষের নিজের বাড়িতে অন্যদের সঙ্গে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। কাউকে তার বাড়ি থেকে আচমকা উচ্ছেদ করা যায় না।
ওই দুই ধারার প্রেক্ষিতেই কমিশন মানুষের নিজের বাড়িতে বাস করার অধিকারকে মানবাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষপাতী। অনেক নেতা-বিধায়ক ঘরছাড়াদের বিষয়টি তাই মানবাধিকার কমিশনের নজরেও এনেছে। বাঁকুড়ার এসপি মুকেশ কুমার বলেন, “আগে কিছু ঘরছাড়াকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন কেউ ঘরছাড়া রয়েছেন কি না জানা নেই।”
কিন্তু বাম আমলের মতো, তৃণমূলের প্রশাসনেও সরকার ঘরছাড়াদের ফেরাতে পারেনি ঘরে। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর, জয়পুর, কোতুলপুর, ইন্দাস ও পাত্রসায়রের মতো ব্লকগুলিতে পঞ্চায়েতে সিপিএমের প্রার্থী হতে চাইছেন না অনেকেই। কেউ প্রার্থী হলেও, তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তাই ঘরছাড়াদের প্রার্থী করতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব। অমিয়বাবু জানান, ওই সব এলাকায় মিছিল, সভা করা হবে না।
তবে রাতের অন্ধকারে দলের কর্মীরা পোস্টার সাঁটাবেন, দেওয়াল লিখবেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে জেলার এই সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
সিপিএমের কেউ ঘরছাড়া রয়েছে, তা স্বীকার করতে চাননি বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ওরা কী ভাবে ভোটে লড়বে, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.