পরিকল্পনায় গলদ, কাজে আগ্রহী নন ঠিকাদাররা
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন
রাদ্দ অর্থ পাওয়ার পরেও কাজ হচ্ছে না! কারণ, টেন্ডারে যোগ দিচ্ছেন না ঠিকাদারেরা। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার কাজ করতে গিয়ে এমন সঙ্কটে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। বুধবার এই বৈঠক শেষে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “কাজে গতি আনতেই এই বৈঠক।”
২০১২-১৩ আর্থিক বছরে এই জেলা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ১৫১০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি বরাদ্দ পেয়েছে। অর্থবর্ষ শেষ হতে চলল। সিংহভাগ রাস্তার টেন্ডারই করা যায়। রাজ্য থেকে থেকে যে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল, তাতে মাত্র ৮২ কিলোমিটারের জন্য দরপত্র জমা পড়েছে। বাকি রাস্তার কাজে আগ্রহ দেখাননি ঠিকাদারেরা। ফলে, এই অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে মাত্র ১৮ শতাংশ কাজের টেন্ডার হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন বৈঠকে ঠিকাদাররা সাফ জানিয়েছেন, ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) ঠিকঠাক না থাকায় তাঁরা কাজ করতে চাইছেন না। ঠিকাদারদের মতে, প্রকৃত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম আনা হয় লরিতে। অথচ রেকে করে মাল আনার খরচ ধরা হয়েছে। রেলের তুলনার লরির খরচ বেশি। অন্য সমস্যাও রয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাটির প্রকৃত বিভিন্ন রকম। কোথাও শক্ত পাথুরে মাটি, কোথাও বা বালি-কাদা মেশানো মাটি। কোনও এলাকা বছরভর শুখা থাকে, কোথাও আবার ফি বছর বন্যা হয়। ডিপিআর তৈরির ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলি গুরুত্ব পায়নি।
কালেক্টরেট অফিসে চলছে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
বর্তমানে রাস্তা তৈরির পর ৫ বছর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হয় ঠিকাদারদের। বন্যাপ্রবণ এলাকায় প্রতি বছরই রাস্তা ভাঙবে, নরম মাটি যেখানে সেখানেও রাস্তা দ্রুত ভেঙে যাবে। ফলে, ওই সব এলাকায় রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেশি হবে। আবার কোনও রাস্তায় একটি কালভার্ট করতে বলা হয়েছে। অথচ দেখা যাচ্ছে, সেখানে দুটি কালভার্ট তৈরি করতে হবে। ঠিকাদার সৌরভ রায় বলেন, “আমরা শক্তপোক্ত কাজ করতে চাই। বেশি লাভও চাই না। ঠিকঠাক ডিপিআর তৈরির পর ১০ শতাংশ লাভ দিক, তাতেই কাজ করে দেব। কিন্তু উপযুক্ত বরাদ্দ না থাকলে কাজ করব কী করে?” জেলাশাসক ঠিকাদারদের আবেদন জানিয়েছেন, তাঁরা যেন বৃহৎ স্বার্থে কাজগুলি করেন। অর্থ ফিরে গেলে জেলা বঞ্চিত হবে।
এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের পরই প্রশ্ন উঠেছিল, আদৌ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যাবে কিনা। কারণ, জেলায় বৃহৎ পরিমাণ রাস্তা করার পরিকাঠামো নেই। এক বছরে ১৫১০ কিলোমিটার (জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ২৮৯টি রাস্তা মিলিয়ে) রাস্তা তৈরি করতে যে পরিমাণ কাঁচামাল, ঠিকাদার বা কর্মী প্রয়োজন তার কোনওটাই নেই এখানে। এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে ন্যূনতম ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়। ফলে, বড় ঠিকাদার ছাড়া কাজ করতে পারবে না। এই জেলায় এমন ঠিকাদারের সংখ্যা মাত্র ২২। গত ১২ বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর ১৩৯০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির বরাদ্দ পেয়েছিল। তার মধ্যে ১০৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজই এখনও শেষ হয়নি। তার উপর ১৫১০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির বরাদ্দ আসে। ফলে, আদৌ কাজ হবে কিনা, সংশয় থেকেই যাচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.