যাত্রী সেজে উঠে বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অবাধে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীদল। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ভোর রাতে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০-এ জাতীয় সড়কে ইঁদপুর থানা এলাকার পায়রাচালি সেতুর কাছে। দুষ্কৃতীদের মারে বাসের চালক, কন্ডাকটর এবং দু’জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহত অবস্থাতেই বাস চালিয়ে চালক বাসটিকে সোজা পুরুলিয়ায় নিয়ে আসেন। চালক ও অন্য আহতদের সদর হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া-তুলিন রুটের একটি বেসরকারি নাইট সার্ভিস বাস রাত দশটা নাগাদ কলকাতা থেকে ছেড়ে তুলিন যাচ্ছিল। বাসের ম্যানেজার সমীর কর জানান, যাওয়ার পথে প্রতিদিনই বাসটি বাঁকুড়ার ধলডাঙা মোড়ে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়ায়। এ দিনও দাঁড়িয়েছিল। সে সময় পুরুলিয়া যাবে বলে জনা ছয়-সাত দুষ্কৃতী যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। তাদের দু’জন চালকের কেবিনে বসে, বাকিরা পিছনের দিকে ছিল। বাস পায়রাচালি সেতুর কাছে আসতেই কেবিনে থাকা দু’জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বাসের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে কব্জা করে ফেলে। যেমন বলা হবে, সে ভাবে বাস চালানোর জন্য চালককে হুমকি দেয়।
ওই বাসের যাত্রী, হুড়া থানার আমলাতোড়া গ্রামের বাসিন্দা শ্রীমন্ত মাহাতো জানান, যাত্রীরা তখন ঘুমিয়ে। হঠাৎই এক জন চিৎকার করে হুমকি দেয়, ‘তাড়াতাড়ি যা আছে, দিয়ে দাও। না হলে পেট্রোল ঢেলে বাসে আগুন লাগিয়ে দেব’। সবাই ভয় পেয়ে যায়। অবাধে যাত্রীদের সর্বস্ব লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। শ্রীমন্তবাবুর কাছ থেকেও তারা মোবাইল ফোন ও বেশ কয়েক হাজার টাকা ছিনতাই করে। তাঁর সঙ্গে থাকা কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ ভেঙে দেয়। লুঠপাট শেষ করে পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার সীমান্তে বিসপুরিয়ার কাছাকাছি জাতীয় সড়ক ছেড়ে বাসটিকে কাঁচা রাস্তায় নামাতে বাধ্য করে দুষ্কৃতীরা। সমীরবাবু জানান, ছিরুডি গ্রামের কিছু দূরে একটি জঙ্গলের কাছে গিয়ে দুষ্কৃতীরা যাত্রীদের হুমকি দিয়ে বাস থেকে নেমে চলে যায়। সেখান থেকে পুরুলিয়া আসার পথে যাত্রীরা হুড়া থানায় ঘটনার কথা জানান।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “যেখানে দুষ্কৃতীরা নেমে গিয়েছে, সেই জায়গাটি দুই জেলার সীমানায়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” |