চার যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করায় এক মহিলাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিলেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের সহকারী সেসন বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার তিনি রায়ে জানান, আদালতে ওই মহিলা মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় সিআরপিসি-র ৩৪৪ ধারায় অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন। সে কারণেই তাঁকে সাজা দেওয়া হল।
ফরাক্কার ভৈরবডাঙা গ্রামের ওই মহিলা ২০০৮ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রতিবেশী চার যুবকের বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতের নির্দেশে ফরাক্কা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ওই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আদালতে মামলার শুনানি শুরু হলে জেরার সময়ে মহিলা জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের আক্রোশ থেকেই তিনি ধর্ষণের এই মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন। এরপরেই বিচারক সোমবার অভিযুক্ত চার যুবককেই সসম্মানে মুক্তির রায় দেন। সরকারি আইনজীবী মতিউর রহমান বলেন, “বিচারক তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, ওই মহিলা ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা মামলা করেছেন ওই চার জনের বিরুদ্ধে এবং তার পরে আদালতে শপথ নিয়ে জানিয়েছেন, জমি নিয়ে বিবাদের জেরেই তিনি তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন।” মতিউর রহমান বলেন, “বিচারক জানিয়েছেন, কাউকে ব্ল্যাকমেল করতে কোনও মহিলা আদালতকে ব্যবহার করবে, এটা অনুচিত। আদালত সেক্ষেত্রে পুতুলের মতো বসে থাকবে না। সে কারণেই তিনি ওই মহিলাকে শাস্তি দিয়েছেন।”
সাজা ঘোষণার পরে ওই মহিলাকে সোজা জঙ্গিপুর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনি নিজেও কার্যত হতবিহ্বল। কেন তাঁকে জেলে যেতে হচ্ছে, তা বুঝতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “অন্যের কথা শুনে ভুল করে ওই অভিযোগ করেছিলাম। এখন কেউ আমার পাশে দাঁড়াল না।” খুবই দরিদ্র পরিবারের বধূ মধ্যবয়সী ওই মহিলার স্বামী বছর তিনেক আগে মারা গিয়েছেন। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের কাছেই থাকেন তিনি। সেই ছেলে দিনমজুর।
ভৈরবডাঙার মসজিদের ইমাম নাজমি আলম জানান, ওই চার যুবক যে সম্পূর্ণ নির্দোষ, তা তাঁরাও জানতেন। তাঁর কথায়, “ওই মহিলাও সরল ও অশিক্ষিত। অন্যের উস্কানিতে এ কাজ করে ফেলেছিলেন।” |