|
|
|
|
খাদ্য-সুরক্ষায় বাম দাবি |
সই ভর্তি লরি, নাকাল প্রধানমন্ত্রীর অফিস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সাদা ফুলস্কেপ কাগজে চার কোটি এক লক্ষ দু’শো তিয়াত্তর জনের সই। কয়েকশো কেজি ওজন। কয়েক ট্রাক ভর্তি করে সেই সইয়ের তাড়া তাড়া কাগজ আজ বাম নেতারা পৌঁছে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসে।
সকলের জন্য খাদ্য-সুরক্ষা ও গণবণ্টন ব্যবস্থার দাবি, এবং খাদ্যে নগদ ভর্তুকি হস্তান্তরের প্রতিবাদে সই সংগ্রহ অভিযানে নেমেছিল চার বাম দল। প্রকাশ কারাট-সীতারাম ইয়েচুরি-সুধাকর রেড্ডি-অবনী রায়েরা আজ সকালে সেই দাবি-দাওয়া সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেন। তার পরে, বিকেল তিনটে নাগাদ সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সইয়ের সম্ভার।
আর সেখানেই বাধে বিপত্তি। প্যাকেট বোঝাই কেজি কেজি কাগজ দেখে নিরাপত্তাকর্মীরা ট্রাক প্রথমে ঢুকতেই দেয়নি। সংসদে সিপিএমের অফিসে টেলিফোন যায়। সেখান থেকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর অফিসকে অনুরোধ জানানোর পরে ট্রাক প্রবেশের ছাড়পত্র পায়। কাগজ নামাতে এক ডজন শ্রমিক লাগাতে হয়। ভিড় জমে যায় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সামনে। |
|
দিল্লিতে এক মিছিলে প্রকাশ ও বৃন্দা কারাট। ছবি: পিটিআই। |
বাম নেতাদের দাবি: সরকার খাদ্য-সুরক্ষা আইন চালু করতে গিয়ে দারিদ্রসীমার উপরে-নীচের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে। পরিবর্তে সকলের জন্যই খাদ্য-সুরক্ষার বন্দোবস্ত করে পরিবারপিছু ৩৫ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া হোক, দাম রাখা হোক কেজি প্রতি সর্বাধিক দু’টাকা। পাশাপাশি খাদ্যে নগদ ভর্তুকির বদলে চালু হোক সর্বজনীন গণবণ্টন। প্রধানমন্ত্রীর কী বক্তব্য? ফরওয়ার্ড ব্লকের দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছেন, সকলকে জোগানোর মতো যথেষ্ট খাদ্যশস্য দেশে উৎপাদন হচ্ছে না। তবে গ্রাম-শহর মিলিয়ে অন্তত ৬৫% মানুষ খাদ্য-সুরক্ষার আওতায় আসবে বলে ওঁর দাবি। চলতি বাজেট অধিবেশনেই বিলটি আনার চেষ্টা চলছে।” খাদ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাম-অনুযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বেশি কৃষককে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
অন্য দিকে বাম নেতাদের দাবি, চার কোটি মানুষের সই বুঝিয়ে দিচ্ছে, আমজনতা কী চাইছেন। তবে শুধু প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছে দেওয়া নয়, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই কোটি কোটি সই দিল্লিতে আনতে বাম নেতাদের ঘাম ছুটে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-ত্রিপুরা থেকে আসা বাম সাংসদদের সঙ্গে ট্রেনে-বিমানে কয়েক কেজি করে কাগজ তুলে দেওয়া হয়েছে। বিমানে অনুমোদিত ওজনের বাড়তি মাল আনতে গিয়ে বাসুদেব আচারিয়ার মতো অনেকে ফ্যাসাদেও পড়েছেন।
কোটি কোটি সই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিস এ বার কী করবে? সিপিএমের এক রসিক নেতার মন্তব্য, “মনমোহন-সরকারের কোষাগারের হাল তো খুব খারাপ! পুরনো কাগজ বেচেই ক’মাসের খরচ উঠে যাবে!” |
|
|
|
|
|