শয্যা রয়েছে মাত্র ১৮টি। চিকিৎসক আছেন পাঁচ জন। বাড়ির অবস্থাও ভাল নয়। বেহাল দশা প্রসূতি বিভাগের। ওই সামান্য সামর্থ নিয়ে সাড়ে তিন লক্ষ বাসিন্দার কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে জেরবারবার দশা হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দলুয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও কর্মীদের। কে বলবে বছরে হাজারের বেশি প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসবের জন্য গত বছর পুরস্কৃত হয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি!
সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি বিধায়ক হামিদুল রহমান। তিনি বলেন, “ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছেও সমস্ত কাগজ পাঠানো হয়েছে। ফের স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।”
উত্তর দিনাজপুরের ওই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল প্রসুতি বিভাগ নিজেদের চেষ্টায় সাজিয়ে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। যদিও তাঁদের কেউ সেখানে সংক্রমণের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ‘অপারেশন থিয়েটার’ না থাকায় লাইগেশন করানো হচ্ছে হাসপাতালের পুরুষ বিভাগের পাশে প্লাই দিয়ে তৈরি ঘরে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক দাস বলেন, “গত বছর হাজারের বেশি প্রসুতির স্বাভাবিক প্রসবের জন্য পুরস্কার পেয়েছি। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমস্যার কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোগ সামান্য বাড়াবাড়ি হলে তাঁদের ছুটতে হয় ২০ কিলোমিটার দূরে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে কিছু না হলে রোগীকে নিয়ে ফের যেতে হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁরা মনে করেন ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করা হলে হয়রানি কিছুটা হলেও কমবে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা কংগ্রেস নেতা গোপাল সিংহ বলেন, “এত বড় এলাকা। একটি মাত্র স্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেখানেও পরিকাঠামোর বেহাল দশা। অথচ ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরে তিন লক্ষ মানুষ নির্ভর করে থাকে। এ ভাবে চলতে পারে না।” তাঁর দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের সমস্যার কথা চিন্তা করে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করা উচিত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দেশা নিয়ে উদ্বিগ্ন চোপড়ার নাগরিক কমিটিও। সংস্থার আহ্বায়ক মুস্তাক আলম বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করার অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি একই অবস্থায় আছে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া বলে আন্দোলনে নামতে হবে।” |