সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় নিশ্চিন্তেই পরীক্ষা দিতে পেরেছেন ছাত্রছাত্রীরা।
মুর্শিদাবাদে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ হাজার ৮১৪ জন। তার মধ্যে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের আবাসিক ২৮ জন। ওই ২৮ জনের মধ্যে রয়েছে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত থেকে বিচারাধীন বন্দি পর্যন্ত সব ধরনের কয়েদি। তাঁদের মধ্যে মহিলাও রয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ১০৮টি। রয়েছেন মোট ২১৬ জন পর্যবেক্ষক। গত বার ৯৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৭৩ হাজার ৭৭৫ জন পরীক্ষা দিয়েছে। গত বারের থেকে এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্য বেড়েছে ২ হাজার ৩৯ জন। এ বারের ৭৫ হাজার ৮১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১ হাজার ৮৮২ জন ছাত্রী। বাকি ৩৩ হাজার ৯২৭জন ছাত্র। অর্থাত্ নানা দিক থেকে পিছিয়ে থাকা মুর্শিদাবাদ জেলায় এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার বেশি। |
নদিয়া জেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০ হাজার ৬৪৯ জন। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৩৬৩২৩ জন। বাকি ৩৪ হাজার ৩২৬ জন ছাত্র। অর্থাত্ ছাত্রের তুলনায় প্রায় ২ হাজার ছাত্রী বেশি। আর গত বছরের থেকে এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার বেড়েছে। নদিয়া জেলায় এ বছর মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৬২। ওই জেলায় এ দিন অসুস্থ অবস্থায় বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালের বিছনায় শুয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন দু’ জন। তাদের মধ্যে এক জন এ দিন বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় পথে দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হয়। অন্য জন অন্তঃসত্ত্বা থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। অন্য দিকে তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষাসেল (মাধ্যমিক)-এর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি দিলীপ সিংহ রায়ের অভিযোগ, “পরীক্ষকেন্দ্র মনোনীত করার কাজটি এ বার যথাযথ ভাবে হয়নি। তার ফলে বেশ কিছু পরীক্ষার্থীকে অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করে পরীক্ষা দিতে যেতে হচ্ছে।” মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় (মাধ্যমিক) পরিদর্শক বিমল পাণ্ডে অবশ্য বলেন, “প্রথম দিনের মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে। কোথাও থেকে কোনও রকম অব্যবস্থা, বা অন্য কোনও রকমের অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেননি।” |
মাধ্যমিকের প্রথম দিন। ছাত্রীদের মুখে হাসি। |
অন্য বারের থেকে এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এ তাবত্কাল মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার জন্য শিক্ষকদের নিয়ে পর্যবেক্ষক দল ও পরিচালন কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটি ও পর্যবেক্ষক দলের তত্ত্বাবধানেই এত দিন মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হত। এ বার শিক্ষকদের নয়ে পর্যবেক্ষক দল তৈরি করা হয়নি। এমনকি প্রতি জেলায় শিক্ষকদের নিয়ে ১৩ জনের একটি পরিচালন কমিটি গঠন করা হলেও দিন পনেরো আগে ওই কমিটি বাতিল করা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলার ওই বাতিল পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রসের নেতা অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে কিছু দিন আগে ওই স্টিয়ারিং (পরিচালন) কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে কি কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই।” |
—বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র। |