আদালতের নির্দেশ
দিদিমার কোলে ফিরছে তোজো
তোজো ফিরছে।
হোমের ঠান্ডা স্যাঁতস্যাঁতে ঘেরাটোপ থেকে পাক্কা সাত মাস পরে বালুরঘাটে, পরিজনের ওমে-আদরে ফিরছে বছর দেড়েকের ছেলেটি।
মার্কিন আদালতের নির্দেশে ছোট্ট ইন্দ্রাশিস সাহা ওরফে তোজোকে নিউজার্সির সেই হোমের ঘেরাটোপ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনছেন তার জ্যাঠামশাই ভাস্কর কুণ্ডু। তবে অন্য কোথাও নয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন আদালত তার ঠিকানাও বেঁধে দিয়েছে, দিদিমার কোল। গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা প্রগতি বসাকের কাছেই থাকতে হবে তাকে। আর এ দেশে সে কেমন আছে, তার নজরদারি করবে রাজ্যের চাইল্ড ওয়াল ফেয়ার কমিটি।
তোজোর ঠাকুরদা-ঠাকুরমার সঙ্গে কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র।
তাঁর নাতি যে ফের বাড়ির ছায়ায় বড় হওয়ার সুযোগ পাবে, ভাবতেই চোখ ভিজে যাচ্ছে প্রগতিদেবীর। আনন্দে চোখ ঝাপসা বালুরঘাটের কুণ্ডু কলোনির সাহা পরিবারেও। সেখানে তোজোর ঠাকুরমা-ঠাকুরদাও বলছেন, “নাতিটা যে দেশে ফিরতে পারছে এই ঢের!” তবে দুই পরিবারই স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রের ঋণ। তোজোর ঠাকুরদা-ঠাকুরমা, নির্মলকৃষ্ণবাবু ও সোনারানিদেবী বলছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার এবং অবশ্যই ওমপ্রকাশবাবু ছাড়া ওর ফেরা সম্ভবই ছিল না।”
নির্মলকৃষ্ণবাবুর ছেলে দেবাশিস একটি বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকরি করেন। গত জুলাই মাসে তাঁর বদলি হয় নিউ জার্সির পার্সিপ্যানি শহরে। সেখানেই গত ৯ অগস্ট খাট থেকে পড়ে যায় তোজো। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যেতেই বিপত্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, পড়ে গিয়ে এমন চোট পাওয়া সম্ভব নয়। শিশুটিকে নিশ্চয় তার বাবা-মা মারধর করেছে। হাসপাতাল থেকেই খবর যায় ‘নিউ জার্সি চাইল্ড প্রোটেকশন টিম’-এর কাছে। বাবা-মা’র কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় তোজোকে। শুধু তাই নয়, ভরণপোষণে অবহেলার অভিযোগে আদালতে দেবাশিস ও তাঁর স্ত্রী পামেলার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে ওই সংস্থা। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তোজোকে হোমে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
গত বছর সেপ্টেম্বরে মাসে ওমপ্রকাশবাবুর উদ্যোগে নির্মলকৃষ্ণবাবু কলকাতায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে নাতিকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে আবেদন জানান। এর পরেই দু’দেশের দূতাবাস স্তরে তৎপরতা বাড়ে। ১৪ সেপ্টেম্বর নিউজার্সির আদালত দেবাশিসবাবুর আবেদনের পরে ঠিক হয়, তাঁর আত্মীয়দের মধ্যে দায়িত্বশীল কোনও পরিবারের হাতে তোজোকে তুলে দেওয়া যাবে। নিউ জার্সির আদালতের নির্দেশ মতো এরপরেই দিল্লির ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড রাইট কমিশনের প্রতিনিধি বিনোদ টিক্কো সবদিক খতিয়ে দেখে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা, তোজোর দিদিমা প্রগতিদেবীকে যোগ্য বলে রিপোর্ট দেন। তার জেরেই আদালতের ওই রায়।

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.