আন্তর্জাতিক স্টেশন হলেও মেটেনি সমস্যা |
নদিয়া জেলার আন্তর্জাতিক প্রান্তিক স্টেশন গেদে। শিয়ালদহ থেকে গেদে স্টেশন ১১৭ কিমি পথ। প্রাচীন নাম ‘জানকীনগর’। পরবর্তীতে হয় গাদিয়া বা গেদে। পাঁচের দশকের শেষদিকে এই স্টেশনের জন্ম। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ভারত-বাংলাদেশ সংযোগকারী মেলবন্ধন রেল-পরিষেবা ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ চালু হওয়ার জন্য গেদে স্টেশনটিকে ঢেলে সাজানো হয়েছিল। স্টেশন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার উত্তরে বাংলাদেশের জয়নগর চেকপোস্ট। তারও দুই-আড়াই কিলোমিটার উত্তরে দর্শনা (বাংলাদেশের প্রান্তিক রেলস্টেশন)। রেললাইনের পাশ দিয়ে দর্শনার দিকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণার্থীদের যাতায়াতের জন্য কংক্রিটের রাস্তা, যেখানে শুধুমাত্র যাত্রী সুবিধার্থে ভ্যানরিকশা চলে (যা আগে ছিল না)। গেদে স্টেশনে দুটি প্ল্যাটফর্ম। বিশেষ নিরাপত্তার বেষ্টনীতে ঘেরা ১ নং প্ল্যাটফর্মটি মৈত্রী এক্সপ্রেস ও সাধারণ লোকাল দু’টি ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক তকমা পাওয়া এই স্টেশনের বেশ কিছু সমস্যা থেকেই গিয়েছে। |
প্রথমত, টিকিট কাউন্টার মাত্র একটি। কিন্তু গেদের সিংহভাগ মানুষের বসবাস আপ প্ল্যাটফর্মের দিকে (দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে)। অতএব, সে দিকে একটা টিকিট কাউন্টার জরুরি। হয়তো দেখা গেল, যে সময় ‘মৈত্রী’ ঢুকল বা লোকাল ট্রেন ঢুকছে বা ছাড়বে, সেই সময় একটা মালগাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হলফলে ট্রেন ধরার ব্যস্ততার জন্য মানুষকে বাধ্য হয়ে মালগাড়ির নীচে দিয়ে পারাপার হতে হয়। টিকিট কাউন্টারে যাওয়ার জন্য রেলের কোনও রাস্তা নেই। ফলে প্ল্যাটফর্মের উপর দিয়েই যাত্রীদের নিজ নিজ সুবিধা মতো টিকিট কাটার ব্যবস্থা করে নিতে হয়। ওভারব্রিজটির অবস্থান এমন জায়গায় যা কাজে আসে না। তৃতীয়ত, মাঝে মাঝে মাইকে ঘোষণায় বিভ্রান্তি ঘটে, ফলে মালগাড়ি ছাড়ার মুহূর্তে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রীরা বিপদে পড়েন। চতুর্থ, রাতের গেদে স্টেশন মাঝেমধ্যেই নিষ্প্রদীপ থাকে। অথচ কখনও কখনও দিনেও সমস্ত আলো জ্বলতে দেখা যায়। সব শেষে জানাই, গেদে উত্তরপাড়া গ্রামের অবস্থান এমন এক জায়গায় যেখানে যেতে গেলে পূর্ব রেলের ৮২ ও ৮৩ নং রেলগেট পার হয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া বিকল্প কোনও রাস্তা নেই। অথচ ইন্টারলকিং সিস্টেমের জন্য দু’টি গেটই ট্রেন ঢোকা ও ছাড়ার সময় বন্ধ থাকে। কিন্তু উত্তরপাড়াবাসীকে উক্ত রেল গেট পার হয়েই যাতায়াত করতে হয়। এমতাবস্থায়, উত্তর দিকের ৮৩ নং রেলগেটটিকে (দর্শনার দিকের রেল গেটটি যেটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের দিকেই রেলগাড়ির যাওয়া এবং আসার জন্য ব্যবহার করলে হয়) শুধুমাত্র ইন্টারলকিং সিস্টেমের অজুহাতে আটকে রেখে গ্রামবাসীকে অযথা হয়রানি করা হয়। উল্লেখ্য, অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল যাত্রী, রোগী এবং শ্মশানযাত্রীকেও অপেক্ষা করতে হয় গেট খোলার জন্য। আবার অধিকাংশ গেটম্যানের অদক্ষতায় ট্রেন ঢোকার পরও দশ-পনেরো মিনিট পর্যন্ত গেট খোলার অপেক্ষায় থাকতে হয়। সমস্যাগুলি ভেবে দেখতে রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
সুজিত কুমার রায়। নদিয়া।
|
রাধানাথ শিকদারের মূর্তি বসুক |
রাধানাথ শিকদার ১৮১৩ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকো অঞ্চলের শিকদারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় চাকরি করার সময় ১৮৫২ সালে প্রথম মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নির্ণয় করে ইতিহাসের পাতায় নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন। আজও তিনি স্মরণীয় সেই কারণে। ২০১৩ সালে তাঁরই জন্মের দ্বিশতবর্ষ পালিত হবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যান্ডেলের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে ইনস্টিটিউট। যেখানে প্রথম সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা কোর্স চালু হয়েছিল এবং আজও তা চলছে। এই ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা দেশে এবং বিদেশে আজও সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ‘ব্যান্ডেল সার্ভে কলেজ’ নামেও পরিচিত। যেহেতু রাধানাথ শিকদার সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সার্ভেয়ার হিসাবে তাঁর বিশিষ্ট পরিচিতি ছিল, সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন, উনি যদি হুগলি জেলার ব্যান্ডেলের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে ইনস্টিটিউটে রাধানাথ শিকদারের একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের ব্যাপারে উদ্যোগী হন এবং একইসঙ্গে তাঁর জন্মদ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তা হলে তা যথার্থ কাজ হবে।
কালীশঙ্কর মিত্র। ভদ্রেশ্বর, হুগলি।
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি
সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা-৭০০০০১ |
|